“যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে,” ভিডিও বার্তায় বলেন রুবেল।
Published : 21 Apr 2024, 02:43 PM
আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিব রুবেল।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অপহরণ ও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে রোববার এক ভিডিও বার্তায় রুবেল দাবি করেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার।
“যে উদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যেটার সঙ্গে আমি কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নই। এটা একটা ষড়যন্ত্র। আমাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে বিভিন্ন মহল সক্রিয় আছে।”
তারপরও সরে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে রুবেল বলেন, “উপজেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন যে, কোনো মন্ত্রী-সংসদ সদস্যের আত্মীয়-স্বজন নির্বাচন করতে পারবেন না। এই ঘোষণার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্দেশনা অনুযায়ী মনোনয়ন পত্রটি প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। অফিসিয়াল যে প্রক্রিয়াগুলো আছে সেগুলো যত দ্রুত সম্ভব সম্পূর্ণ করব।”
জানতে চাইলে সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিংড়া পৌরসভার মেয়র মো. জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, “ভিডিওটি আমাকেও পাঠানো হয়েছে। তারা ফোনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়েছেন।”
আসন্ন উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হন সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক লুৎফুল হাবিব রুবেল। সেজন্য শেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
কিন্তু ১৫ এপ্রিল রাতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে তুলে নিয়ে মারধরের অভিযোগ ওঠে রুবেলের বিরুদ্ধে। দেলোয়ার এখনও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রুবেলকে নির্বাচন কমিশনে তলব করা হয়। পরদিন শুক্রবার উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকেও তাকে শোকজ করা হয়।
এদিকে নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখতে আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়-স্বজনদেরও প্রার্থী হতে দল থেকে নিষেধ করা হলে প্রতিমন্ত্রীর শ্যালক রুবেলের প্রসঙ্গও আসে।
শুক্রবার হাসপাতালে গিয়ে দেলোয়ারকে দেখে এসে দুঃখ প্রকাশ করেন সিংড়ার এমপি পলক। পরে রুবেলকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন।
রোববার ভিডিও বার্তায় রুবেল বলেন, “২০০২ সাল থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় আছি, ২০০৫ সালে গোল ই আফরোজ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। এর পাশাপাশি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বপালন করেছি, বর্তমানে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছি।
“গত ৩ তারিখে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পদত্যাগ করি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে পরপর তিন বার নির্বাচিত হই।…গত ৮ তারিখে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র সাবমিট করি। তারপরে যে উদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যেটার সঙ্গে আমি কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নই। এটা একটা ষড়যন্ত্র।”
ভিডিওর শেষে আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন রুবেল।
দেশে এখন ৪৯৫টি উপজেলা রয়েছে। এবার চার ধাপে নির্বাচন উপযোগী ৪৮৫টিতে ভোট হবে, পরে মেয়াদোত্তীর্ণ হলে বাকিগুলোয় ভোটের আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন। প্রথমধাপের ১৫০ উপজেলায় ৮ মে ভোট হবে।
আইনে দলীয় প্রতীকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ভোট করার সুযোগ থাকলেও স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বা মনোনয়ন না দেওয়ার কথা আগেই জানিয়ে রেখেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ফলে আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্বাচন করতে হচ্ছে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে।
আরো পড়ুন-
সিংড়ার রুবেলকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ পলকের
‘প্রার্থীকে অপহরণ-মারধর’: সিংড়ার রুবেলকে আওয়ামী লীগের শোকজ
এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়-স্বজনদের প্রার্থী হতে প্রধানমন্ত্রীর মানা