এ বিষয়ে ডিসির মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর আবেদন করা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়েছে।
Published : 07 Oct 2024, 10:33 PM
পাহাড়ে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সীমিত আকারে হলেও তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
সোমবার সন্ধ্যায় বান্দরবান প্রেস ক্লাবের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এ আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বান্দরবান পর্যটন ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদে আহ্বায়ক নাছিরুল আলম বলেন, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে ঝামেলা চলার কারণে সব পর্যটক বান্দরবানে আসা শুরু করেছেন। হোটেল ও পরিবহনে ছাড় দেওয়ার ঘোষণা এবং দুর্গাপূজা ও প্রবারণ পূর্ণিমা উপলক্ষে অগ্রিম বুকিং দেওয়া শুরু হয়।
এর মধ্যে প্রশাসনের ‘ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায়’ পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। পর্যটকদের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে।
রোববার বিকালে ‘অনিবার্য কারণ’ দেখিয়ে অক্টোবর মাসে পাহাড়ে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য পর্যটকদের অনুরোধ জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। পার্বত্য রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৃথকভাবে এই অনুরোধ জানানো হয়েছে।
একদিন পর পর্যটন ব্যবসায়ীদের নেতা নাছিরুল আলম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “রুমা ও থানচি এলাকায় কুকি চিন ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকলেও নীলাচল, মেঘলা, চিম্বুক ও নীলগিরি এলাকায় ঘুরে যেতে সমস্যা নাই। খাবার হোটেল, থাকার হোটেল এবং ঘুরে বেড়ানো সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। অথচ নির্বাহী কোনো আদেশ ছাড়া একটা নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা দিয়ে ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলে দিয়েছে প্রশাসন।”
খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলার সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে নাছিরুল আলম বলেন, সেখানে সমস্যা থাকলেও বান্দরবানে কোনোকালে এ ধরনের সমস্যা ছিল না; হবেও না। এখানে পারস্পরিক সহাবস্থান ও সম্প্রীতি রয়েছে।
তার প্রশ্ন, “অথচ বান্দরবানকেও নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনে সম্প্রীতির মূল্য থাকল কী?”
তিনি বলেন, “নিরাপত্তার শঙ্কা যদি থাকে, যেসব এলাকায় ভ্রমণে নিরাপত্তা থাকবে না, পর্যটকদের সেসব এলাকায় যেতে আমরাও নিরুৎসাহিত করব।”
পর্যটকদের ভ্রমণে ব্যবহৃত পরিবহনের শ্রমিকদের কথা উল্লেখ করে সংগঠনটির আহ্বায়ক নাছিরুল আলম বলেন, “২০০টা গাড়ির পেছনে ৪০০ জন শ্রমিক জড়িত। তাদের যে গাড়ি কেনা হয়েছে, তা ব্যাংক ঋণ নিয়ে। কিস্তি পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু গাড়ি না চললে সে কিছুই করতে পারবে না।
“বান্দরবানবাসীর একমাত্র আয়ের উৎস পর্যটন খাত। এই অঞ্চলের সব সম্প্রদায়ের মানুষ এ পর্যটন খাতের ওপর নির্ভর করে।”
এ পরিস্থিতিতে ‘ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা’ তুলে নেওয়ার বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে তাদের বলা হয়েছে বলেও জানান নাছিরুল আলম।
তিনি আরও বলেন, বান্দরবান পর্যটন ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের পক্ষ থেকে পর্যটক ভ্রমণে ওপর থেকে বিধি-নিষেধ তুলে নিতে ডিসির মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার বরাবার সোমবার একটি আবেদন জমা দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদ সিরাজুল আলম, আরণ্যক হোটেলে পরিচালক জসিম উদ্দিন, হলি ডে ইন’র পরিচালক জাকির হোসেন, মাস্টার গেস্ট হাউসের ম্যানেজার নেওয়ং মারমা ছিলেন।