“পুরো ঘটনা এখনও বলা যাচ্ছে না। একজন নাকি একাধিক লোক ছিল তাও বলা যাচ্ছে না। তবে, আমাদের সঙ্গে কারো ঝামেলাও নেই।”
Published : 04 Jan 2025, 12:24 PM
ফরিদপুরের মধুখালীতে এক সাংবাদিকের গ্রামের বাড়িতে বাবা-মাসহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার ডুমাইন গ্রামের পূর্বপাড়া বোস বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) শৈলেন চাকমা।
আহতরা হলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্যামলেন্দু বসু (৬৫), তার স্ত্রী কাকুলী বসু (৬০) ও প্রতিবেশী কিশোরী প্রীতি মালো (১৫)। তারা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শ্যামলেন্দু বসু দৈনিক আজকের পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক সৌগত বসুর বাবা। সাংবাদিক সৌগত ঢাকায় কর্মরত।
আহতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাতে ঘরে তারা টিভি দেখছিলেন। এ সময় ঘরের ভেতর একজনকে দেখতে পান। তাকে ধরতে চাইলে সে বাড়ির দোতলায় অবস্থান নেয়।
সেখানে গেলে ওই ব্যক্তি ধারালো অস্ত্র দিয়ে শ্যামলেন্দু বসুর মাথায় কোপ দেয়। পরে অন্যরা এগিয়ে এলে তাদেরও কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যায় ওই দুর্বৃত্ত।
সৌগতের কাকিমা শুক্লা বসু বলেন, “আমরা ফরিদপুর শহরে থাকি। রাত সাড়ে ৮টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় ওনারা আমাকে ভিডিও কল দিয়ে বাঁচানোর আকুতি জানান। পরে আমি প্রতিবেশীদের জানালে তারা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।”
সাংবাদিক সৌগত বসু বলেন, “বাড়িতে আমার বাবা-মা ছাড়া কেউ থাকে না এবং প্রীতি আমার অসুস্থ মাকে দেখাশুনা করত। তারা এখন গুরুতর অসুস্থ, পুরো ঘটনা এখনও বলা যাচ্ছে না। একজন নাকি একাধিক লোক ছিল তাও বলা যাচ্ছে না। তবে, আমাদের সঙ্গে কারো ঝামেলাও নেই।”
তিনি আরও বলেন, “এটি চুরির কোনো ঘটনা নয়। বাবা-মা অনেক রাত পর্যন্ত টেলিভিশন দেখেন। কেউ চুরি করলে তখন আসবে কেন? এছাড়া কোনো মালামালও খোয়া যায়নি। এটা অবশ্যই হামলা বা অন্য কোনো ঘটনা হতে পারে।”
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের চিকিৎসক অর্ণব বলেন, “শ্যামলেন্দু বসুর মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। তার মাথার হাড় ভেঙে গিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যদের আঘাত গুরুতর নয়।”
ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জীবন কুমার মণ্ডল বলেন, “শ্যামলন্দ দাদার তিন ছেলে বিভিন্ন জেলায় চাকরি করেন। বাড়িতে শ্যামল দা তার স্ত্রী ও তাদের দেখাশোনার জন্য এক কিশোরী থাকেন। তাছাড়া বাড়িতে কেউ থাকেন না। ”
তিনি বলেন, “এদের কারো সঙ্গে শত্রুতা নেই। মনে হচ্ছে চুরি করতে ঢুকেছিল। দেখা ফেলায় হামলা করে। ”
এদিকে খবর পেয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শৈলেন চাকমা (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) সহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।
এ সময় শৈলেন চাকমা বলেন, “প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে চুরি করতে গিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। ১৪-১৫ বছর এক কিশোর ওই বাড়িতে অবস্থান নেয়। বিষয়টি দেখতে পেয়ে গৃহকর্তা ধাওয়া দিলে তাকে এবং অন্যদের আঘাত করা হয়েছে।
“তবে, বিষয়টি আরও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে”- যোগ করেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।