ফরিদপুরের তিন উপজেলায় ৪৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে নদীর সাড়ে সাত কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পাউবো।
Published : 29 Mar 2025, 09:34 AM
ফরিদপুরের তিনটি উপজেলা হয়ে বয়ে গেছে মধুমতি নদী। অতীতে নদী ভাঙনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সড়ক, ফসলি জমি, মসজিদসহ বসতবাড়ি হারিয়েছেন হাজারো মানুষ।
ভাঙন রোধে নদী পাড়ের বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে ৪৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে মধুমতির তীর রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। স্বপ্নের বাস্তব রূপ দেখে উচ্ছ্বসিত নদী পাড়ের বাসিন্দারা।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, ২৮টি প্যাকেজের আওতায় মধুমতি নদীর তীর রক্ষা বাঁধের প্রকল্পটির ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
বিগত সময় নদীর ভয়াল থাবায় আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি, পাকা সড়ক, মসজিদসহ বসতবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন হাজারো মানুষ। এখনও হুমকিতে রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ কয়েক শত বসতবাড়ি।
আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজরা গ্রামের নদী তীর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাঁধ নির্মাণে চলছে কর্মযজ্ঞ। ভেকু দিয়ে কাটা হচ্ছে পাড়, পাশেই ব্লক তৈরি করে তা ফেলা হচ্ছে তীরে। কেউ আবার বালু ভর্তি জিওব্যাগ ফেলছেন নদী পাড়ে।
এ বাঁধ নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখাচ্ছে নদী পাড়ের বাসিন্দাদের। তবে বাঁধ নির্মাণে যেন কোনো অনিয়ম না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা।
নদী পাড়ের বাসিন্দা এনামুল হাসান, মুজাহিদুল ইসলাম, শরিফ হাবিব, সখিনা খাতুন, রেখা পারভিনসহ অনেকের সঙ্গে কথা হয়। তারা সবাই প্রায় একই কথা বলেন।
তারা বলেন, স্বাধীনতার পর এই অঞ্চলের জনপ্রতিনিধি, সরকারি উচ্চপদস্ত কর্মকর্তাসহ এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে তারা যাননি। তাদের দাবি ছিল, বাপ-দাদার শেষ সম্বলটুকু রক্ষায় মধুমতি পাড়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের।
অবশেষ দীর্ঘ অপেক্ষার পর তিনটি উপজেলার বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সাত কিলোমিটার অংশে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে কাজ শুরু হয়েছে। আর এতেই নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন তারা।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব হোসেন বলেন, “এর মধ্যে মধুমতি নদীর তীর রক্ষা বাঁধের ৩০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে আশা করছি।
“৪৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে সাত কিলোমিটার তীর রক্ষা বাঁধ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পাউবো। প্রকল্পটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি।”
বাঁধ নির্মাণ শেষ হলে নদী পাড়ের বাসিন্দাদের ফসলি জমি, বাড়ি-ঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষা পাবে বলে জানান পাউবোর এই কর্মকর্তা।