হবিগঞ্জে বেতন-রেশনের দাবিতে চা শ্রমিকদের বিক্ষোভ

চা শ্রমিকদের অভিযোগ, ইমাম ও বাওয়ানী চা বাগান কর্তৃপক্ষ গত ৩ সপ্তাহ ধরে শ্রমিকদের মজুরি, রেশন ও বোনাস বন্ধ রেখেছে।

হবিগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2023, 02:50 PM
Updated : 15 Feb 2023, 02:50 PM

হবিগঞ্জে বকেয়া বেতন ও রেশনের দাবিতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন চা শ্রমিকরা। 

বুধবার বেলা ৩টার দিকে জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ইমাম ও বাওয়ানী চা বাগানের শ্রমিকরা এ বিক্ষোভ করেন। 

এ সময় তারা জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর স্মারকলিপি দেন। 

চা শ্রমিকদের অভিযোগ, ইমাম ও বাওয়ানী চা বাগান কর্তৃপক্ষ গত ৩ সপ্তাহ ধরে শ্রমিকদের মজুরি, রেশন ও বোনাস বন্ধ রেখেছে। এ ছাড়া বাগানের পতিত জমি বহিরাগত লোকদের কাছে লিজ দেওয়া হয়েছে। চা শ্রমিকরা দিনের পর দিন আন্দোলন করলেও এসবের কোনো সমাধান হচ্ছে না।

তাই এবার বাধ্য হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান নিয়ে তারা বিক্ষোভ করেন এবং জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিকার চেয়ে স্মারক লিপি দিয়েছেন। 

বেদেশ্বরী নামের এক নারী চা শ্রমিক বলেন, “চা বাগানে কাজ করে সংসার চালাই। এখন কয়েক সপ্তাহ ধরে আমরা বেতন-রেশন পাচ্ছি না। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কীভাবে চলব তা বুঝতে পারছি না।”

আরেক চা শ্রমিক মানিক দাস বলেন, “আমাদের সমস্যা সমাধানের যেন কেউ নাই। আমরা বেশ কিছুদিন ধরে বেতন, রেশন ও টাকা-পয়সা পাচ্ছি না। আমরা খুবই অসহায়। আমাদের সমস্যার সমাধান না করে দিতে পারলে গুলি করে মেরে ফেলেন!” 

আরেক নারী চা শ্রমিক জয়ন্তী রানী। তার ভাষ্য, “আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে ভিক্ষা চাচ্ছি, যেন আমাদের সমস্যা সমাধান করে দেন। না হলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।”

ইমাম চা বাগানের পঞ্চায়েত প্রধান ভজন রবি দাশ জানান, অনেক দিন ধরে বাগান কর্তৃপক্ষ তাদের দেনা-পাওনা নিয়ে টালবাহানা করছে।  বেতন ভাতা ও রেশন বন্ধ করে দিয়েছে। এখন তারা বাগানের অফিসও বন্ধ করে রেখেছে। 

“আমরা নিরুপায় হয়ে ডিসি মহোদয়ের কাছে এসেছি। তিনি যদি এর  সুষ্ঠু সমাধান না দেন তা হলে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে,” বলেন ভজন রবি দাশ। 

এ বিষয়ে বাগান দুটির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) জিকে মঈনউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “চা নিলামের ক্ষেত্রে আমরা ব্রোকার হাউজের সাথে চুক্তি করে থাকি। আমি যে ব্রোকার হাউজের কাছে চুক্তিবদ্ধ তার কাছে ৫০ হাজার কেজি চা পড়ে রয়েছে। এই চা বিক্রি না হওয়ায় এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে শিগগিরই শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করে বাগান চালু করা হবে।” 

হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, বিভিন্ন কারণে এরই মধ্যে বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এক সপ্তাহের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করে বাগান চালু না করা হলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

বাগানের শ্রমিকদের খাবারের জন্য নগদ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।