“টানা বৃষ্টির কারণে আমাদের সব ফসলই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে রোপা আমন আবাদ পুরোপুরি ব্যাহত হবে।”
Published : 23 Aug 2024, 06:03 PM
এক সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প এলাকার চাঁদপুর সদর ও ফরিদগঞ্জ উপজেলায়। এতে বেশি ক্ষতি হয়েছে রোপা আমন, আখ ও মৌসুমি সবজির।
কৃষি বিভাগ বলছে, জেলা জুড়ে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হতে পারে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্লোল কিশোর সরকার জানান, উপজেলার সেচ প্রকল্প এলাকায় চার দিনের টানা বৃষ্টিতে ফসলি জমিগুলো প্লাবিত হয়েছে। একই সঙ্গে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বীজতলা। এই উপজেলায় এ বছর ১৬২ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে আবাদ হয়েছে ৩৯০ হেক্টর।
এছাড়া আখের আবাদ করা হয়েছে ১২৮ হেক্টর জমিতে। চলতি মাসের শেষের দিকেই আখ কর্তন শুরু হবে। শাক সবজি আবাদ করা হয়েছে ১৬০ হেক্টর।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার চান্দ্রা, মদনের গাঁও, মানিকরাজ, গাজীপুর, কেরওয়া, ধানুয়াসহ আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ আখের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জলাবদ্ধতায়। আখগুলো নুয়ে পড়েছে। আর রোপা আমন এবং বীজতলা অধিকাংশ তলিয়ে গেছে।
সদর উপজেলার বাগাদি সোবহানপুর এলাকার কৃষক জাহাঙ্গীর বলেন, “সেচ প্রকল্প এলাকায় অনেক কৃষক বর্গা চাষি। অন্যের জমি চাষ করে তাদের সংসার চলে। টানা বৃষ্টিতে রোপা আমন পানির নিচে। পানি অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেকে বীজ রোপণ করতে পারেননি।”
ওই এলাকার আরেক কৃষক রিয়াদ হোসেন বলেন, “যেসব কৃষক ঋণ করে বিআর-৪৯ ধান রোপণ করেছেন তারা আছেন দুশ্চিন্তায়। এমন পরিস্থিতিতে কৃষি বিভাগ থেকেও কোনো লোকজন আসেনি। পানি নিষ্কাশনের জন্য সেচ পাম্প গুলো চালু রাখার দাবি জানাই।”
ফরিদগঞ্জ উপজেলার মানিকরাজ গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, “টানা বৃষ্টির কারণে আমাদের সব ফসলই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে রোপা আমন আবাদ পুরোপুরি ব্যাহত হবে।”
একই এলাকার আখ চাষি অহিদুর রহমান বলেন, “জলাবদ্ধতায় আখের মধ্যে পচন লাগে। বিক্রি করলেও দাম পাওয়া যাবে না। আমরা এবার আখে পুরোপুরি লোকসান দিতে হবে।”
ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্লোল কিশোর সরকার বলেন, বৃষ্টির পানিতে উপজেলার অনেক ফসল নিমজ্জিত। বৃষ্টি কমলে আমরা কৃষকদের পরামর্শ দেব তারা যাতে নাবি জাতের অর্থাৎ আমনের বিআর-২২ ও ২৩ জাত আবাদ করতে। এর জন্য বীজ পরিবেশকদের সঙ্গে কথা বলছি। আর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠাবো।
কৃষি কর্মকর্তা সাফায়েত আহম্মদ বলেন, “অতি বৃষ্টির কারণে চাঁদপুরে রোপা আমন ব্যাহত হচ্ছে। বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত এবং রোপা আমন লাগানো বিলম্বিত হচ্ছে। এভাবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে।
“আমরা অন্যান্য দুর্যোগের সময় কৃষকদের যেমন তালিকা করি, এক্ষেত্রে সেভাবে তালিকা করা হবে। যাতে করে পরবর্তী মৌসুমে এসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় আনা যায়।”