৬ জুন মধ্যনগর উপজেলার পরাজিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সাইদুর রহমানের বাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালানো হয়।
Published : 11 Jun 2024, 12:28 AM
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা, তাণ্ডব ও প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণের অভিযোগ এনে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করা হয়েছে।
সোমবার বিকালে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে বক্তারা এমন দাবি জানান।
একইসঙ্গে ওই নির্বাচনের পর পরাজিত প্রার্থীর বাড়িতে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারেরও দাবি জানানো হয়।
গত ৫ জুন মধ্যনগর উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আব্দুর রাজ্জাক ভূইয়া মোটরসাইকেল প্রতীকে ১২ হাজার ৮৫৩ ভোট পেয়ে চেয়াম্যান পদে জয় পেয়েছেন। তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী সাইদুর রহমান কাপপিরিচ প্রতীকে পেয়েছেন ৯ হাজার ৯১৬ ভোট।
পরদিন ৬ জুন বিজয়ী আবদুর রাজ্জাক ভূঁইয়ার সমর্থকরা এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ করে পরাজিত প্রার্থী সাইদুর রহমান বলেন, এতে তার পরিবারের সাত সদস্য আহত হন।
তার অভিযোগ, আবদুর রাজ্জাক ভাইয়ের ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই হামলা চালিয়েছেন। হামলার পর তারা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। উপরন্তু তাদের বিরুদ্ধে আবার মামলা দেওয়া হয়েছে।
নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান রাজ্জাকের ছোট ভাই পুলিশের রংপুর বিভাগের ডিআইজি আব্দুল বাতেন।
তবে এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আব্দুর রাজ্জাক ভুঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, “যখন ঘটনা ঘটেছে বলা হয়েছে তখন আমি এলাকায় ছিলাম না। সাইদুর রহমানের লোকজনই আমার লোকদের ওপর হামলা করেছে।”
হামলা ও তার পরবর্তী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে এদিন সমাবেশের আয়োজন করে ‘সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন-সিলেট’। সাবেক ছাত্র নেতা প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান চৌধুরী ওয়েছের সভাপতিত্বে সভা সঞ্চালনা করেন দেবাশীষ দেবু।
সমাবেশে সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন-সিলেট এর সমন্বয়ক আব্দুল করিম কিম বলেন, “৬ জুন মধ্যনগরে মধ্যযুগীয় বর্বরতা চালানো হয়েছে। নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীর অনুসারীরা দলবল নিয়ে পরাজিত প্রার্থীর বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। হামলা করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি, আহতদের চিকিৎসা নিতেও বাধা দিয়েছে। এমনকি সাইদুর রহমানের স্বজনদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এলাকায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। এমনকি তারা মামলাও করতে পারছেন না।”
কিম বলেন, “সাইদুর রহমানের জামাতা দ্বোহা চৌধুরী সিলেটের প্রতিশ্রুতিশীল সাংবাদিক। শ্বশুরের নির্বাচন দেখতে তিনিও মধ্যনগরে গিয়েছিলেন। নির্বাচনের আগে নানা অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে তার পত্রিকায় রিপোর্টও করেন। এসব কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকরা দ্বোহা চৌধুরী এবং তার স্ত্রী-সন্তানদেরও ওইদিন জিম্মি করে রাখে।”
তিনি বলেন, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে আক্রান্ত পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মধ্যনগর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থী সজল কান্তি সরকার, ওই এলাকার বাসিন্দা বাদল চন্দ্র সরকার, সাংবাদিক উজ্জ্বল মেহেদী, ইমজা সভাপতি সজল ছত্রী, সাবেক সভাপতি আশরাফুল কবির, সাধারণ সম্পাদক শ্যামানন্দ দাশ, সিলেট ভয়েস এর প্রকাশক সেলিনা হোসেন চৌধুরী, পরিবেশ কর্মী রেজাউল কিবরিয়া, রুমেনা বেগম রুজি, সৈয়দ আনসার আলী, সংস্কৃতিকর্মী মাহবুব রাসেল, নাহিদ পারভেজ বাবু, বিমান তালুকদার, যুব ইউনিয়ন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান, সাবেক ছাত্রনেতা সহিদুজ্জামান পাপলু, সপ্তর্ষি দাশ, ছাত্র ইউনিয়ন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হাসান প্রান্তিক, ছাত্রফ্রন্ট সিলেটের সাধারণ সম্পাদক বুশরা সুহেল, কবি মেঘদাদ মেঘ।