“শহিদুল আমাকে বলছিল, ভাবী মারিয়ামকে (সুমাইয়ার মেয়ে) সামলান, মারিয়ামের মা আর নেই।”
Published : 25 Jun 2024, 11:27 PM
সাভারের আশুলিয়ায় ‘প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান’ করায় এক গৃহবধূকে তার শিশু সন্তানের সামনেই হত্যা করেছেন প্রতিবেশী যুবক। হত্যার পর পালিয়ে না গিয়ে ছুরি হাতে ঘরের সামনেই দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে আশুলিয়ার ভাদাইল তালতলা এলাকার সোহেলের ভাড়া বাসায় এই ঘটনার পর র্যাবের টহল দল ছুরিসহ যুবককে গ্রেপ্তার করে বলে জানিয়েছেন র্যাব-৪ সিপিসি-২ এর স্কোয়াড কমান্ডার ও সহকারী পুলিশ সুপার মো. সাজ্জাদুর রহমান।
নিহত সুমাইয়া আক্তার (২৩) রংপুর জেলার বদরগঞ্জ থানার মাসুদ রানার স্ত্রী। মাসুদ রানা স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। আড়াই বছরের এক মেয়ে নিয়ে ওই বাড়িতে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন তারা।
গ্রেপ্তার শহিদুল ইসলাম বিদ্যুৎ (৩২) নাটোর জেলার লালপুর থানার বিজয়পুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। তিনিও ওই বাসায় পাশের রুমেই ভাড়া থাকতেন। পেশায় তিনিও পোশাক শ্রমিক।
ওই বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াদের বরাতে সহকারী পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর জানান, গত ১ বছর ধরে একই বাসায় পাশাপাশি রুমে ভাড়া থাকেন সুমাইয়া আক্তারের পরিবার ও শহিদুল। পরিচয়ের পর থেকেই সুমাইয়াকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন শহিদুল।
কিন্তু প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় মঙ্গলবার দুপুরে সুমাইয়ার কক্ষে প্রবেশ করে ধারালো ছুরি দিয়ে তার গলায় আঘাত করেন শহিদুল। এতে সুমাইয়া অচেতন হয়ে পড়লে গলাকেটে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন শহিদুল।
বাড়ির মালিকের স্ত্রী জানান, সুমাইয়ার মেয়ের কান্না শুনে ঘর থেকে বের হয়ে দেখেন ছুরি হাতে রক্ত মাখানো অবস্থাতেই ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল শহিদুল ইসলাম।
প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া নারী মেরিনা বেগম বলেন, “বাড়িওয়ালীর ডাকে আমরা ঘর থেকে বের হয়ে দেখি শহিদুল সিঁড়ির উপর ছুরি হাতে দাঁড়িয়ে আছে। তাও আমি সাহস করে ঘরে ঢুকে দেখি সুমাইয়ার পুরো শরীরে রক্ত।
“শহিদুল আমাকে বলছিল, ভাবী মারিয়ামকে (সুমাইয়ার মেয়ে) সামলান, মারিয়ামের মা আর নেই।”
আরেক ভাড়াটিয়া মো. সবুজ বলেন, “বাড়ির মালিক ডাকলে আমি রুম থেকে বের হয়ে ঐ রুমে গিয়ে দেখি নারীর গলা কাটা লাশ। আর ওই লোক চাকু নিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। পরে আমি বাইরে গিয়ে আরও কয়েকজনকে ডেকে এনে পুলিশে খবর দেই।”
র্যাব কর্মকর্তা সাজ্জাদুর রহমান বলেন, “শহিদুল ইসলাম বিদ্যুৎকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি প্রেমে প্রত্যাখান হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হয়েছি।”
খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে। এই ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।