কোটা আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
Published : 15 Jul 2024, 04:23 PM
কোটা আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘মন্তব্য’ ও মধ্যরাতে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের পাশে প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ফিরে যান শিক্ষার্থীরা।
এ সময় 'তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার', 'চেয়েছিলাম অধিকার হয়ে গেলাম রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে সরকার সরকার’, ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই' বলে স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তোফায়েল আহমেদ বলেন, “আমাদের আজকে কোনো কর্মসূচি দেওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু রোববার প্রধানমন্ত্রী আন্দোলন নিয়ে যে বক্তব্যটি দিয়েছেন সেটি শুনে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়েছেন।
“এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে তার প্রতিবাদে এ কর্মসূচি। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি দ্রুত জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
রোববার বিকালে বঙ্গভবনে সাম্প্রতিক চীন সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে চলমান কোটা আন্দোলন নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? তাদের নাতি-পুতিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে? এটা আমার দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন।”
প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এরপর মধ্যরাতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন তারা।
২০১৮ সালে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র হাই কোর্ট অবৈধ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা মাঠে নেমেছে। তারা প্রথমে সেই পরিপত্র ফিরিয়ে আনা অর্থাৎ কোটা তুলে দেওয়ার দাবি জানালেও পরে সংস্কারের দাবি তুলেছে।
গত সপ্তাহে মঙ্গলবার বাদ দিয়ে প্রতিটি কর্মদিবসেই বাংলা ব্লকেড নামে অবরোধ কর্মসূচি পালন করায় যান চলাচলে তীব্র ভোগান্তি হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত নির্বিঘ্নে কর্মসূচি পালন করলেও বৃহস্পতিবার থেকে পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে, একাধিক এলাকায় বাধাও দেওয়া হয়েছে।
পরে এক আদেশে কোটা আন্দোলন নিয়ে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। সেই শুনানিতে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য তুলে ধরার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
তবে শিক্ষার্থীরা সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে কোটার বিষয়ে ফয়সালা চাইছেন, আর ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন।
রোববার শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি মেনে নিতে রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি দেন। এতে জাতীয় সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে কোটা সংস্কারের দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন আন্দোলনকারীরা।
পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে করা সব মামলা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলে নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন।
এদিন বিকালে প্রধানমন্ত্রী চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “কোটার বিষয়টি ফয়সালা হবে আদালতেই। আর রাস্তায় ধ্বংসাত্মক কিছু হলে আইন নিজস্ব গতিতে চলবে’।”
আরও পড়ুন:
ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক দেড় ঘণ্টা অবরোধ রাবি শিক্ষার্থীদের
ঢাবি ক্যাম্পাসে কোটাবিরোধীদের সঙ্গে সংঘর্ষে ছাত্রলীগ