বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় মৎস্য আড়ৎসহ বাসা-বাড়িতে ফ্রিজে রাখা মাছ-মাংস নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানায় গ্রাহকরা।
Published : 18 Nov 2023, 07:42 PM
ঘূর্ণিঝড় মিথিলির প্রভাব কেটে যাওয়ার ৩৩ ঘণ্টা পর ঝালকাঠি শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। এদিকে ঝড়ে আমন ধানসহ বিভিন্ন সবজির ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে বন্ধ হয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ সরবরাহ শনিবার বিকাল ৫টার পর চালু হয় বলে জানিয়েছেন ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন মাস্টার শফিকুল ইসলাম।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গাছ পড়ে বিদ্যুতের তার ছিড়ে যায়। ঝড় থেকে গেলে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যুক্ত হয়ে ভেঙে যাওয়া গাছ অপসারণ করেন।
বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের ওপর থেকে বড় বড় গাছ অপসারণ করতে অনেক সময় লেগে যায় বলে জানান তিনি।
এদিকে, দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েন গ্রাহকরা। এ সময়ের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় পৌর শহরের পানি সরবরাহ। মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিকস পণ্যসামগ্রীর ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়।
এ ছাড়া বন্ধ ছিল কলকারখানা ও অধিকাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। মাছের আড়ৎসহ বাসা বাড়িতে ফ্রিজে রাখা মাছ-মাংস নষ্ট হয়ে গেছে।
শহরের পৌর খেয়াঘাট এলাকার গৃহিণী রোকেয়া বেগম বলেন, “আমার ফ্রিজের মাছ, মাংস-সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। মাসের বাকি দিনগুলো চলতে বেশ বেগ পেতে হবে।”
মোমবাতি জ্বালিয়ে কোনো রকম জীবনযাপন করার কথা জানিয়ে শহীদ স্মরণি এলাকার বাসিন্দা নিরব হোসেন বলেন, “বেসরকারি মোবাইল কোম্পানির টাওয়ারগুলোতে জেনারেটর ব্যবস্থা না থাকার কারণে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে এ দুইদিন চরম দুর্ভোগে কাটিয়েছি।”
ওজোপাডিকো ঝালকাঠির নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহিম সাংবাদিকদের বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে জাতীয় গ্রিডের সঞ্চালন লাইনে অনেক গাছ ভেঙে পড়ে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে গাছ পড়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায়। এতে পুরো জেলায় বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ।
বিদ্যুৎ বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বিকাল ৫টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।
ঝড়-বৃষ্টিতে ধান ও সবজির ক্ষতি
প্রবল ঝড় বৃষ্টিতে জমিতে রোপা আমন নুয়ে পড়েছে। কাদামাটিতে মিশে গেছে কচি সবজি। পেঁপেসহ বিভিন্ন সবজি ও পানের বরজের ক্ষতির কথা জানিয়েছে কৃষক।
ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ বছর জেলায় ৪৮ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়েছে। যেসব ধান গাছ পরিপক্ব হয়েছে সেগুলো জমিতে শুয়ে পড়তে পারে। তবে বেশিরভাগ ধান গাছের মাথা ভার না হওয়ায় সেগুলোর তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি।
সবজির ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তিনি বলেন, “যেসব স্থানে শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়; সেসব ক্ষেত ‘সজ্জন’ বা কাঁদি পদ্ধতির। ক্ষেতে পানি জমতে না পারায় ক্ষতির আশঙ্কা কম।”
তবে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ শেষে রোববার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানো হবে বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।