১০ নভেম্বর আজিজুর রহমানের স্ত্রী উম্মে সালমা খাতুনের লাশ বাড়িতে থাকা ডিপফ্রিজের ভিতরে পাওয়া যায়।
Published : 27 Nov 2024, 07:15 PM
বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় গৃহিনী উম্মে সালমা খাতুনকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে রাখার মামলায় ছেলে সাদ বিন আজিজারকে জামিন দিয়েছে আদালত।
বুধবার দুপুরে বগুড়ার জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শাহজাহান কবীর জামিনের আদেশ দেন বলে আসামির আইনজীবী উৎপল কুমার বাগচী জানান।
তিনি বলেন, “পুলিশের বিশদ তদন্ত এবং তিন আসামির আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি পর্যালোচনা করে সাদের জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে।”
ছেলের জামিনের পর সাদের বাবা আজিজার রহমান সালমা হত্যায় প্রকৃত দোষীদের বিচারের দাবি করেন।
১০ নভেম্বর দুপুরে আজিজুর রহমানের স্ত্রী উম্মে সালমা খাতুনের (৫০) লাশ বাড়িতে থাকা ডিপফ্রিজের ভিতরে পাওয়া যায়। উপজেলা সদরের জয়পুরপাড়া এলাকায় ‘আজিজিয়া মঞ্জিল’ নামে বাড়িটির আলমারি ভাঙা ও জিনিসপত্র এলোমেলো করে রাখা ছিল।
১১ নভেম্বর উম্মে সালমা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
পরদিন ১২ নভেম্বর র্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. এহতেশামুল হক খান নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘হাত খরচের টাকা এবং প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে মনোমালিন্যের জেরেই’ মাকে হত্যার পর লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখে সাদ বিন আজিজুর রহমান।
কিন্তু সাদ আদালতে কোনো জবানবন্দি দেননি। এর মধ্যে পুলিশ তাকে আবার রিমান্ডে নেয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যেই ১৪ নভেম্বর রাতে উম্মে সালমার বাসার চারতলার ভাড়াটিয়া দুপচাঁচিয়া উপজেলার চামরুল ইউনিয়নের উত্তর সাজাপুর গ্রামের আইয়ুব আলীর স্ত্রী মাবিয়া বেগম (৫০), গুনাহার ইউনিয়নের তালুচ পশ্চিমপাড়ার আব্দুর রহিমের ছেলে মোসলেম উদ্দিন (২৬) এবং একই এলাকার নিখিল রবিদাসের ছেলে ভ্যান চালক সুমন রবি দাসকে (২৮) গ্রেপ্তার করে।
তাদের গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে আলোচিত এই মামলা ‘নতুন মোড়’ নেয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে ১৫ নভেম্বর বগুড়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
এ সময় ঘটনার সঙ্গে নিহতের ছেলের জড়িত থাকার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এমন কোনো প্রমাণ এখনও আমাদের কাছে নেই। তিনি র্যাবের কাছে স্বীকার করলেও আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।”
তবে রোববার র্যাব বলেছে, ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমানের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতেই তাকে মায়ের ‘হত্যাকারী' হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছিল।
এর পরেও র্যাবের তদন্তে নিজেদের কারও ‘গাফিলতি বা তথ্যগত কিংবা প্রক্রিয়াগত ভুল থাকলে' ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থার আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফট্যানেন্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।
আরও পড়ুন:
গৃহবধূকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে: আরো দুজনের জবানবন্দি
বগুড়ায় সালমা হত্যায় 'নতুন মোড়', ছেলের রিমান্ডের মধ্যে গ্রেপ্তার ৩
সালমা হত্যার বিষয়ে 'ছেলের ভাষ্যই' উপস্থাপন করা হয়েছে: র্যাব
টাকা-প্রেম নিয়ে মনোমালিন্যে মাকে হত্যা করে ডিপ ফ্রিজে রাখে ছেলে