হত্যাকাণ্ডে ছেলের জড়িত থাকার প্রসঙ্গে জেলা পুলিশের মুখপাত্র বলেন, “এমন কোনো প্রমাণ এখনও আমাদের কাছে নেই।”
Published : 15 Nov 2024, 09:33 PM
বগুড়ার গৃহবধূ উম্মে সালমাকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে রাখার মামলা নতুন মোড় নিয়েছে।
উম্মে সালমার ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান এই হত্যাকাণ্ডের আসামি হিসেবে রিমান্ডে থাকার মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে আরও তিন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডের পর ছেলেকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দাবি করেছিল, হাত খরচের টাকা এবং প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে মনোমালিন্যের জেরেই মাকে হত্যার পর লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখে সাদ বিন আজিজুর রহমান।
কিন্তু শুক্রবার বগুড়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, “সাদ তার মাকে হত্যা করেছে এমন কোনো জবানবন্দি দেননি আদালতে। কিছু তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা কিছু তথ্য আমাদেরকে দিয়েছে সেগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি।”
বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন হলেন- উম্মে সালমার বাসার চারতলার ভাড়াটিয়া দুপচাঁচিয়া উপজেলার চামরুল ইউনিয়নের উত্তর সাজাপুর গ্রামের আইয়ুব আলীর স্ত্রী মাবিয়া বেগম (৫০), গুনাহার ইউনিয়নের তালুচ পশ্চিমপাড়ার আব্দুর রহিমের ছেলে মোসলেম উদ্দিন (২৬) এবং একই এলাকার নিখিল রবিদাসের ছেলে ভ্যান চালক সুমন রবি দাস (২৮)।
পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের সময় ওই বাসা থেকে খোয়া যাওয়া ওয়াইফাই রাউটার ও মোবাইলের সূত্র ধরে তারা প্রথমে মাবিয়া আক্তারকে আটক করেন। পরে আরও দুজনকে আটক করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
টাকা-প্রেম নিয়ে মনোমালিন্যে মাকে হত্যা করে ডিপ ফ্রিজে রাখে ছেলে: র্যাব
বগুড়ায় নিজ বাসার ডিপ ফ্রিজে নারীর লাশ
তাদের দেখানো জায়গা থেকে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত জিনিসপত্র এবং ওই বাসা থেকে খোয়া যাওয়া জিনিসপত্রগুলো উদ্ধার করেছে।
ভাড়াটিয়া হিসেবে মাবিয়া বাসায় ‘মাদক ব্যবসা ও অনৈতিক কাজ’ করতেন দাবি করে পুলিশ বলছে, এজন্য তাকে বাসা ছাড়ার কথা বলা হয়েছিল। ‘সেই ক্ষোভ থেকে’ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে।
বগুড়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, “তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন রয়েছে।”
ঘটনার সঙ্গে নিহতের ছেলের জড়িত থাকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এমন কোনো প্রমাণ এখনও আমাদের কাছে নেই। তিনি র্যাবের কাছে স্বীকার করলেও আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।
“এরপরে তাকে আমরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেই। তিনি এখনও রিমান্ডেই আছেন।”
১০ নভেম্বর দুপুরে আজিজুর রহমানের স্ত্রী উম্মে সালমা খাতুনের (৫০) লাশ বাড়িতে থাকা ডিপফ্রিজের ভিতরে পাওয়া যায়। উপজেলা সদরের জয়পুরপাড়া এলাকায় ‘আজিজিয়া মঞ্জিল’ নামে বাড়িটির আলমারি ভাঙা ও জিনিসপত্র এলোমেলো করে রাখা ছিল।
১১ নভেম্বর উম্মে সালমা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
পরদিন ১২ নভেম্বর সকালে র্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. এহতেশামুল হক খান নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘হাত খরচের টাকা এবং প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে মনোমালিন্যের জেরেই’ মাকে হত্যার পর লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখে সাদ বিন আজিজুর রহমান।