এ নিয়ে দুদিনে মোট নয়টি কারখানা বন্ধ করা হয়েছে।
Published : 04 Nov 2024, 11:11 PM
শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে গাজীপুরে অনির্দিষ্টকালের জন্য আরো তিনটি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে দুদিনে মোট নয়টি কারখানা বন্ধ করা হয়েছে।
রোববার বন্ধ হওয়া তিনটি কারাখানা হচ্ছে- মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় এম এম নিটওয়্যার, মুকুল নিটওয়্যার, মামুন নিটওয়্যার।
বন্ধ হওয়া এম এম নিটওয়্যার কারখানার প্রশাসন বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মনোয়ার হোসেন বলেন, “কোনো শ্রমিকের বেতন বকেয়া নেই। প্রতি মাসের সপ্তম কর্মদিবসের মধ্যে তাদের বেতন দেওয়া হয়। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার পরও আজ তারা অযৌক্তিক দাবিতে কারখানায় বিশৃঙ্খলা করে কাজ বন্ধ রাখে।
“এতে উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটে এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়। কারখানার পরিবেশ এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে।”
বন্ধ হওয়া তিনটি কারখানার ফটকেই অনির্দিষ্টকালের বন্ধের নোটিশ টানিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
নোটিশে বলা হয়েছে- দুপুরে শ্রমিকরা অযৌক্তিক দাবিতে বেআইনিভাবে কাজ বন্ধ রাখে। একপর্যায়ে তারা কারখানার বাইরে গিয়ে ফটকে হামলা করে। তাদের বেশকিছু দাবি কারখানার কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়ে কাজে যোগদানের জন্য বারবার অনুরোধ করার পরও তারা আদেশ অমান্য করে কারখানার বাইরে অবস্থান করে।
কর্তৃপক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারী, শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং কারখানার সম্পত্তি রক্ষার স্বার্থে সোমবার তিনটি কারখানার সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্তৃপক্ষ বন্ধ ঘোষণা করে দেয়। অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে নোটিশের মাধ্যমে কারখানা খোলার তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে বলেও নোটিশে বলা হয়েছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ (কোনাবাড়ী জোনের) জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার আবু তালেব বলেন, “শ্রমিকদের বেশ কিছু দাবি নিয়ে আমরা মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলছি। বিসিক এলাকায় ছোটখাটো কয়েকটি কারখানায় শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করেছে।
“শ্রমিকদের অযৌক্তিক দাবিতে এম এম নিটওয়্যার কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।”
এদিকে কোনাবাড়ী বিসিক এলাকায় ইসলাম গ্রুপ, রেজাউল অ্যাপারেলস, এ বি এম ফ্যাশন, লাইফ টেক্স, অ্যাস্ট্রো নিটওয়্যার কারখানার শ্রমিকরা রোববার কারখানা অভ্যন্তরে কাজ না করে বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি পালন করে। পরে ওইসব কারখানা একদিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
কোনাবাড়ী থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, “সাত-আটটি কারখানার শ্রমিক সকালে কারখানায় প্রবেশ করে কাজ না করে শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি পালন করে। পরে কর্তৃপক্ষ আজকের জন্য ছুটি ঘোষণা করেন।”
এদিকে কাশিমপুরের ডরিন ফ্যশন লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বকেয়া বেতনের দাবিতে কালিয়াকৈর-আশুলিয়া সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ (কোনাবাড়ী জোনের) জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার আবু তালেব বলেন, ডরিন কারখানার মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে সমঝোতা হয়েছে। শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
“পরে শ্রমিকেরা তাদের কর্মসুচি প্রত্যাহার করে নেয় এবং মঙ্গলবার থেকে কারখানার স্বাভাবিক কার্যক্রম চলবে।”