সম্প্রতি মাগুরা পৌর এলাকার বরুণাতৈল গ্রামে রাব্বির বাসায় গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর একটি প্রতিনিধি দল।
Published : 12 Dec 2024, 06:04 PM
কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে নিহত মাগুরা জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা মেহেদী হাসান রাব্বি।
তার স্ত্রী রুমি খাতুন বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কন্যা শিশুর জন্ম দেন।
মা-মেয়ে সুস্থ আছেন বলে চিকিৎসকরা জানান।
নবজাতকের আগমনে রাব্বির পরিবারে আনন্দের পরিবর্তে নেমেছে বিষাদের ছায়া।
রাব্বির ভাই ইউনুস আলী বলেন, “রাব্বির স্ত্রী সন্তানসম্ভবা ছিলেন। বুধবার রাতে ঘর আলো করে কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছেন তার ভাইয়ের স্ত্রী। আফসোস, ভাই তার মেয়েকে দেখে যেতে পারল না। তার সন্তানও কোনোদিন বাবাকে দেখতে পারবে না।”
৪ অগাস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মাগুরা-ঢাকা মহাসড়কের পারনান্দুয়ালী ব্যাপারীপাড়া জামে মসজিদ এলাকায় অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও বিএনপির নেতাকর্মীরা। পাশে ঢাকা রোড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নেন পুলিশের সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
এ সময় দুপক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলিবিদ্ধ হন ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান রাব্বি। তাকে উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার লাশ দাফন করা হয়।
হাসপাতালের পরিচালক মহসিন উদ্দিন বলেন, “রাব্বির বুকে গুলির চিহ্ন দেখা গেছে।”
এ ঘটনায় নিহত রাব্বির ভাই ইউনুস আলী বাদী হয়ে মাগুরার আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, বীরেন শিকদারসহ ১৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে রাব্বির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
এদিকে, গত রোববার মাগুরা পৌর এলাকার বরুণাতৈল গ্রামে রাব্বির বাসায় গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর একটি প্রতিনিধি দল।
এ সময় মাগুরায় রাব্বিসহ মোট ১০ নিহত এবং একটি আহত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।