রি-এজেন্টের অভাবে তাজউদ্দীন মেডিকেলে ৮ ধরনের পরীক্ষা বন্ধ

রি-এজেন্ট কেনার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া বাজেটে সারা বছর চলার মতো রি-এজেন্ট কেনা সম্ভব হয় না বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Jan 2023, 11:25 AM
Updated : 8 Jan 2023, 11:25 AM

রি-এজেন্টের অভাবে প্রায় এক বছর ধরে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বন্ধ রয়েছে আট ধরনের পরীক্ষা। ফলে রোগীদের যেমন ভোগান্তি বেড়েছে তেমনি বেড়েছে চিকিৎসা ব্যয়। 

হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের টেকনোলজিস্ট মোমেন হোসেন মোল্লা বলেন, রি-এজেন্ট না থাকায় তারা সিরাম ইলেকট্রোলাইট, ট্রপোনিন-আই, টিএসবি, টি-৩ ও টি-৪, এফএসএইচ, এইচবিএ-ওয়ান সি, এলএইচসহ গুরুত্বপূর্ণ আটটি পরীক্ষা করতে পারছেন না প্রায় এক বছর ধরে। 

এর আগে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানালে যৎসামান্য রি-এজেন্ট ক্রয় করায় তা দিয়ে কয়েকটি পরীক্ষা এক মাস চলে। কিন্তু এরপর সেই আগের অবস্থা। এখনও এ সমস্যার সমাধান হয়নি। 

টেকনোলজিস্ট মোমেন বলেন, হাসপাতালে ট্রপোনিন পরীক্ষার জন্য ৩০০ টাকা এবং ইলেকট্রোলাইট পরীক্ষার জন্য ২০০ টাকা, এইচবিএ-ওয়ান সির জন্য ২৫০, টি-৩ ও টি-৪ এর জন্য ২০০-৩০০ টাকা করে নেন। 

“কিন্তু বাইরে এসব পরীক্ষার জন্য যথাক্রমে ১৩০০ টাকা, ১০০০ টাকা, ১১০০ টাকা এবং ১০০০-১২০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে বলে জেনেছি।” 

সম্প্রতি বাবার চিকিৎসা করাতে এই হাসপাতালে গিয়েছিলেন গাজীপুর মহানগরের ভোগড়া এলাকার মাসুদ রানা। চিকিৎসক তার বাবাকে ট্রপোনিন ও ইলেক্টলাইট পরীক্ষা করতে বলেন। 

কিন্তু হাসপাতালে এ পরীক্ষা করাতে গেলে তাকে জানানো হয়েছে পরীক্ষাগুলো বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে পাশে থাকা বেসরকারি একটি ল্যাবে বেশি মূল্যে তার পরীক্ষাগুলি করাতে হয়েছে। 

এ ছাড়া বেলা ১২টার পরে হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য কোন নমুনাও নেওয়া হয় না। ফলে তখনও পরীক্ষার জন্য তাদের বাইরে ছুটতে হয়। এতে টেনশন, সময় ও পরীক্ষা খরচ বেড়ে যায় রোগীদের। 

একই সংকটের কথা বলেন, গাজীপুর সদরের পিরুজালী গ্রামের জনয়ব বেগমও। তিনিও পাশের ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বেশি ফি দিয়ে ইলোক্টোলাইট পরীক্ষা করেছেন। 

টেকনোলজিস্ট মোমেন বলেন, অনেক নমুনা পরীক্ষার জন্য বেশ সময় দরকার হয়। তাই দুপুর সাড়ে ১২টার পরে কোন নমুনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয় না। 

হাসপাতালের পরিচালক তপন কান্তি সরকার জানান, এসব পরীক্ষার রি-এজেন্টের দাম প্রচুর। রি-এজেন্ট কেনার জন্য তাদের পর্যাপ্ত বাজেটও নেই। ইচ্ছা করলেও নিজেদের পক্ষে কেনা সম্ভব হয় না। এজন্য টেন্ডার দিতে হয়। 

তিনি বলেন, “রি-এজেন্ট কেনার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে যে বাজেট দেওয়া হয় তা দিয়ে সারা বছর চলার মতো রি-এজেন্ট কেনা সম্ভব হয় না।” 

আবারো বাজেট বরাদ্দের জন্য অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। হয় জানুয়ারি শেষে বা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে রি-এজেন্ট কেনার ব্যবস্থা হবে। তখন ওইসব পরীক্ষা করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।