বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে দাবি সম্বলিক স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
Published : 22 Nov 2024, 01:13 AM
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার ও পৈতৃক জমি ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। পরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
মিছিলে তীর-ধনুক, ব্যানার-ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড হাতে শতাধিক সাঁওতাল ও বাঙালি নারী-পুরুষ অংশ নেন।
বৃহস্পতিবার সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ ও এ এল আরডি যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাঁওতাল পল্লী মাদারপুর ও জয়পুর গ্রাম থেকে সাঁওতাল-বাঙালিরা বাসে করে গাইবান্ধা শহরের পলাশবাড়ী সড়কের সুখশান্তি বাজার এলাকায় নেমে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।
মিছিলটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে এসে অবস্থান নেয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ সংগ্রাম কমিটির সভাপতি চিকিৎসক ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বাবু, সদস্য কুশলাষীশ চক্রবর্তী এবং ফারুক কবীর বক্তব্য দেন।
এ ছাড়া গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির তনু, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের সদর উপজেলা আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, আদিবাসী নেতা প্রিসিলা মুরমু, সুচিত্রা মুরমু তৃষ্ণা এবং থমাস হেমব্রম বক্তব্য দেন।
সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর তৎকালীন সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ ও রংপুর সুগার মিলের কর্মকর্তাদের নির্দেশে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ সাঁওতালদের বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে অভিযান চালায়। সেই সময় সংঘর্ষে ৩০ সাঁওতাল আহত হন।
তাদের মধ্যে মঙ্গল মারডি, রমেশ টুডু ও শ্যামল হেমব্রম মারা যান। অগ্নিসংযোগ করা হয় সাঁওতালদের ঘরবাড়ি। গত নয় বছরেও এই হত্যার বিচার হয়নি। আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয় নাই। বাস্তবায়ন করা হয়নি সরকারের বিভিন্ন আশ্বাস। সেই ঘটনায় নির্যাতনের শিকার সাঁওতালরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
আহতরা উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে কেউ পঙ্গু, কেউ শরীরে গুলি নিয়ে অসহ্য যন্ত্রণায় কর্মক্ষমতা হারিয়ে মানবেতর জীবন পার করছেন বলে জানান তিনি।
সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার, বাড়িঘর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতালদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
সাঁওতালদের পৈতৃক জমিতে ইপিজেড নির্মাণ বন্ধ করে তাদেরকে জমিতে ফেরত দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সমাবেশ শেষে সংগঠনের নেতারা গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।