সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নির্মাণাধীন ১৫তলা বিশিষ্ট ক্যানসার ভবনের এক শ্রমিককে চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের লোকজনের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার সকালে এ ঘটনার পর জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ।
নিহত শ্রমিক নয়নের বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায়।
আটককৃতরা হলেন- দিনাজপুরের রুবেল (৩২), বগুড়ার আব্দুর রাজ্জাক, কুড়িগ্রামের আমিনুল ইসলাম, আয়নাল ও সাবান আলী।
তারা সবাই নির্মাণাধীন ভবনের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামাল অ্যান্ড কোং এ কর্মরত এবং মালিকপক্ষের আত্মীয় বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত শ্রমিক আইয়ুব আলীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নির্মাণাধীন ভবনের একাধিক শ্রমিক সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নির্মাণ শ্রমিক নয়ন ও আইয়ুব আলীকে ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ও চারটি মোবাইল চুরির অভিযোগে একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাদের হাত-পা বেঁধে লাঠি ও রড দিয়ে পেটানো হয়। চিৎকার করে পানি খেতে চাইলেও দেওয়া হয়নি।
প্রায় দুই ঘণ্টা চলে এই নির্যাতন। একপর্যায়ে গুরুতর আহত অবস্থায় নয়নকে ফেলে রেখে নির্যাতনকারীরা চলে যায়। পরে সকাল সোয়া ৯টার দিকে নয়নকে অন্য শ্রমিকরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেন, “এখন পর্যন্ত চুরির কোনো নিদর্শন পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধী যেই হোক তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
এ বিষয়ে জানাতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামাল অ্যান্ড কোং-এর দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী মনসুর সাংবাদিকদের বলেন, “আমি বাইরে আছি। শুনেছি সাইডে কী একটা ঘটনা ঘটেছে।
তার কাছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগের মোবাইল নম্বর চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
গত ১৯ মার্চ নির্মাণাধীন এই ভবনের তৃতীয় তলা থেকে পড়ে জুরান মিয়া নামে এক শ্রমিক মারা যান। অভিযোগ আছে, কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই ওই ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে।
নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় নগর ভবনের পাশে সিটি সুপার মার্কেটে নির্মাণকাজের দায়িত্বে রয়েছে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামাল অ্যান্ড কোং।
৩ জুন ওই ভবনের নির্মাণকাজ চলার সময় উপর থেকে লোহার পাইপ পড়ে মারা যান দেলোয়ার হোসেন নামের এক সেনাসদস্য।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামির তালিকায় রয়েছে জামাল অ্যান্ড কোং কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মো. জামাল উদ্দিন।