“ক্যাম্পের কাঁটাতারের বাইরে থেকে আরসার ৩০-৩৫ সদস্য প্রবেশ করে অতর্কিতে এপিবিএন সদস্যদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে।”
Published : 14 Jul 2024, 07:16 PM
‘মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান যুদ্ধে অংশ নিয়ে’ কক্সবাজারের ক্যাম্পে এসে আশ্রয় নেওয়া সশস্ত্র রোহিঙ্গা সংগঠন ‘আরসার এক কমান্ডারকে’ আটক করা হয়েছে। এর জেরে প্রতিপক্ষের সংঘবদ্ধ হামলায় এক পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
এপিবিএন জানায়, শনিবার গভীর রাতে উখিয়া উপজেলার ২০ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মেইন এ-ব্লকে অভিযান চালিয়ে ‘আরসা কমান্ডার’ মোহাম্মদ ইলিয়াসকে (২৬) আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে দুটি বিদেশি জি-থ্রি রাইফেল ও ৫০টি গুলি উদ্ধার করা হয়।
ইলিয়াস উখিয়ার ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ-১৫ সাব ব্লকের মৃত হাসান আহমদের ছেলে।
এরপরই ক্ষিপ্ত আরসা সদস্যরা রোববার ভোরে উখিয়া উপজেলার মধুরছড়া ৪-এক্সটেনশন নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ ব্লকে দায়িত্বরত এপিবিএন সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এতে কনস্টেবল মো. শাহরাজ (২৫) গুলিবিদ্ধ হন। তাকে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রোববার বিকালে উখিয়ার ১৪ এপিবিএন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ১৪ এপিবিএন এর পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল।
ইলিয়াসকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি বলেন, “ইলিয়াস মিয়ানমারে যুদ্ধ করে ১৫-১৬ দিন আগে ক্যাম্পে এসে আশ্রয় নেন। এসেই আরসা সদস্যদের অস্ত্র সরবরাহ করছে। ইলিয়াস চার মাস করে চারবার সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তিনি আরসার রোহিঙ্গা ক্যাম্প শাখার সামরিক প্রধান।
“গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রাত দেড়টার দিকে ইলিয়াসকে আটকের জন্য অভিযান শুরু করে এপিবিএন। এ সময় এপিবিএন সদস্যদের ওপর গুলি করা হয়। তখন এপিবিএন সদস্যরাও পাল্টা গুলি করে। এক পর্যায়ে তিনজন পালিয়ে গেলেও অস্ত্রসহ ইলিয়াসকে আটক করে এপিবিএন।”
পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ আরসার সদস্যরা ভোররাতে উখিয়ার মধুরছড়া ৪- এক্সটেনশন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ ব্লকে নিরাপত্তায় নিয়োজিত এপিবিএন পুলিশের নয় সদস্যের ওপর হামলা চালায়।
“ক্যাম্পের কাঁটাতারের সীমানার বাইরে থেকে ৩০-৩৫ আরসা সদস্য এসে অতর্কিতে এই হামলা চালায়। তারা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। তখন আত্মরক্ষার্থে এপিবিএন সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। প্রতিপক্ষের গুলিতে কনস্টেবল মো. শাহরাজ গুলিবিদ্ধ হন। তার ডান উরু ও ডান হাতের আঙ্গুলে আঘাত লেগেছে।”
এপিবিএন কর্মকর্তা বলেন, শাহরাজকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসক তাকে কক্সাবাজার সদর হাসপাতালে পাঠায়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হয়।
আরসা কমান্ডার ইলিয়াসকে আটক এবং এপিবিএন সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানান পুলিশ সুপার।