“সোহেল বাবার ভাড়ায় চালিত রিকশা নিয়ে বের হয়। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।”
Published : 12 Jul 2024, 11:04 AM
বরিশালে দুই মাস আগে নিখোঁজ এক কিশোরের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে; যাকে তার বন্ধু বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে নদীর মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। পরে ওই বন্ধুর দেওয়া তথ্যে কিশোরের কঙ্কালের সন্ধান পায় পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে ১১টায় বরিশাল সদর উপজেলা ও ঝালকাঠির নলছিটির উপজেলার মধ্যবর্তী এলাকা খয়রাবাদ সেতুর নিচ থেকে কঙ্কালটি উদ্ধার করা হয় বলে বন্দর থানার ওসি আব্দুর রহমান মুকুল জানান।
পুলিশ বলছে, কংকালটি নিখোঁজ ১৫ বছর বয়সী কিশোর মো. সোহেল ফরাজীর। সে বরিশাল নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দা রিফিউজি কলোনি এলাকার বাসিন্দা রিকশা চালক ফরিদ ফরাজীর ছেলে।
এ ঘটনায় তার বন্ধুকে (১৫) আটক করেছে পুলিশ। তার বাড়িও একই এলাকায়।
ঘটনার বর্ণনায় সোহেলের ভাই সোহাগ ফরাজী বলেন, “আমার ভাই ট্রাক চালকের সহকারী হিসেবে কাজ করতো। চালক বিদেশে চলে যাওয়ায় সে বেশ কিছুদিন বেকার ছিল। দুই মাস আগে ভাইকে তার এক বন্ধু বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। তখন সোহেল বাবার ভাড়ায় চালিত ব্যাটারি রিকশা নিয়ে বের হয়। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। ওই বন্ধুও নিখোঁজ ছিল।
“পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে ছেলেটির পরিবারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে বৃহস্পতিবার বিকালে তার সন্ধান পাওয়া যায়। সে বাড়িতেই আত্মগোপনে ছিল। স্থানীয়রা সোহেলের ব্যাপরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে উল্টাপাল্টা উত্তর দেয়। এ সময় সন্দেহ হওয়ায় তাকে রুমের মধ্যে আটকে রেখে কোতোয়ালি থানায় খবর দেওয়া হয়। এরপর পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে আমার ভাইকে হত্যার কথা স্বীকার করে।”
এরপর ঘটনাস্থল বন্দর থানা এলাকায় হওয়ায়, বন্দর থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানানো হয়। তারা পরে ছেলেটির দেওয়া তথ্যে এবং দেখানো স্থান থেকে খয়রাবাদ সেতুর নিচে সোহেলের কঙ্কালের সন্ধান পায় বলে জানান সোহাগ।
সোহেলের বন্ধু আটক ওই কিশোর বলছিল, তার সঙ্গে থাকা আরও তিন বন্ধু সোহেলের বাবার ব্যাটারি চালিত রিকশাটি নেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করে। ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী নগরীর লাকুটিয়া সড়কের একটি দোকান থেকে ঘুমের ওষুধ কেনে তারা।
এরপর কীর্তনখোলা নদীর ওপর সেতুতে গিয়ে ঘুমের ওষুধ গুঁড়ো করে এনাজিং ড্রিংকসের সঙ্গে মেশানো হয়। এরপর সেখান থেকে চারজন খয়রাবাদ সেতুর নিচে যায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই এনার্জি ড্রিংক সোহেলকে পান করানো হয়।
এ কিশোরের ভাষ্য, “সোহেল অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে নদীর মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়। পরে রিকশা বিক্রি করে পালিয়ে যাই।”
বন্দর থানার ওসি আব্দুর রহমান মুকুল বলেন, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরিশাল মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ফজলুল করিম বলেন, বন্দর থানা পুলিশ এক কিশোরের হাড়গোর উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হবে।