নড়াইলে অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত: চারজনকে রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নড়াইল সদর উপজেলায় মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করা এবং কলেজে হামলায় ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

নড়াইল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 July 2022, 10:17 AM
Updated : 3 July 2022, 10:17 AM

রোববার দুপুরে বিচারিক হাকিম আদালতে আসামিদের হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হলে বিচারক আমাতুল মোর্শেদা তা মঞ্জুর করেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সঞ্জিত কুমার বসু জানান।

তিনি আরও বলেন, চার আসামিকে সকাল ১০টায় জেলা কারাগার থেকে সদর আমলি আদালতে আনা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহমুদুর রহমান প্রত্যেক আসামির পাঁচদিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক প্রত্যেকের তিন দিন করে রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করেন।  

আসামিরা হলেন- মির্জাপুরের সৈয়দ রিমন আলী, মির্জাপুর বাজারের মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী শাওন খান, মধ্যপাড়ার মো. মনিরুল ইসলাম ও রহমত উল্লাহ রনি।

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, গত ১৭ জুন মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের এক ছাত্র ভারতের বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার বিতর্কিত এক বক্তব্য নিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট দেওয়ার পরদিন কলেজে গেলে কিছু মুসলমান ছাত্র তাকে ওই পোস্ট মুছে ফেলতে বলেন।

এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস পুলিশে খবর দেন। এর মধ্যে ‘অধ্যক্ষ ওই ছাত্রের পক্ষ নিয়েছেন’ এমন কথা রটানো হলে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। অধ্যক্ষ ও দুজন শিক্ষকের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে তাদেরও সংঘর্ষ বাধে।

ওই সময় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে কলেজের ছাত্র ও স্থানীয়রা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়। ওই ঘটনার কিছু ছবি ও ভিডিও ফেইসবুকে আসে, যাতে পুলিশের উপস্থিতিও দেখা যায়।

এ ঘটনায় ২৫ জুন মির্জাপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শেখ মোরছালিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ১৭০ থেকে ১৮০ জনকে আসামি করে নড়াইল সদর থানায় মামলা করেন। তার পরই আসামিদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ ঘটনার পর জেলা প্রশাসন এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঠিত তিন সদস্যের কমিটির প্রধান ছিলেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জুবায়ের হোসেন চৌধুরী। অন্য দুই সদস্য হলেন- মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সায়েদুর রহমান ও সদর থানার ওসি শওকত কবীর।

শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় তদন্ত কমিটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের কাছে প্রতিবেদনটি জমা দেয়। এ সময় অন্য দুই সদস্যও উপস্থিত ছিলেন।

তারপর রাতেই শওকত কবীরকে সদর থানা থেকে খুলনায় রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মাহামুদুর রহমানকে ওসির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

তবে কী কারণে ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়ে হয়েছে এ বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি জেলা পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়।

আরও পড়ুন: