বুধবার দিনভর ইভিএমে ভোট শেষে নগরীর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে স্থাপিত ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্র থেকে কেন্দ্রভিত্তিক বেসরকারি ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী।
কেন্দ্রভিত্তিক এই ফলাফলের মধ্য দিয়েই সাধারণ আসনে কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরদের জয়-পরাজয় তাৎক্ষণিকভাবে জেনে যান ভোটাররা।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, শুধু মেয়র পদপ্রার্থীরা দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে পারেন। আর কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের দল থেকে সমর্থন দেওয়া হয়। তারা সবাই স্বতন্ত্র প্রার্থী।
সেই অনুযায়ী, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ২৭ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলরদের সমর্থন দেওয়া হয়। কিন্তু এর বাইরেও প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডে একাধিক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ভোট করেন।
তৃতীয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১০৬ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ঘোষিত বেসরকারি ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নগরীর ২৭টি সাধারণ আসনে কাউন্সিলর পদে এবং নয়টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদের অধিকাংশেই জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও কুমিল্লা মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০টিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিজয় হয়েছে। বিএনপি নেতারা চারটি, জামায়াতে ইসলামীর নেতারা দুটি এবং নির্দল ব্যক্তি একটিতে জয় পেয়েছেন।
আর নয়টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদের মধ্যে সাতটিতেই জয় পেয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেত্রীরা। একটি বিএনপি এবং বাকি একটাতে জিতেছেন জামায়াতের কর্মী।
২৭ ওয়ার্ডের মধ্যে ভোটের আগেই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সৈয়দ রায়হান আহমেদ এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মঞ্জুর কাদের মণি।
৭ নম্বর ওয়ার্ডে আবদুর রহমান, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে জমির উদ্দিন খান জম্পি, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে হাবিবুর আল আমিন সাদী, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে কাজী জিয়াউল হক মুন্না, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে আবুল কালাম আজাদ হাসেম।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডে জাহাঙ্গীর আলম বাবুল, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে হানিফ মাহমুদ, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে শওকত আকবর, ২০ নম্বর ওয়ার্ডে আনোয়ার হোসেন, ২২ নম্বর ওয়ার্ডে আজাদ হোসেন, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে আনিছুজ্জামান হানিফ, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে এমদাদ উল্লা, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে আবদুস সাত্তার এবং ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে আবুল হাসান।
বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে সাইফুল বিন জলিল, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে রেজাউল করিম, ২১ নম্বর ওয়ার্ডে কাজী মাহবুবুর রহমান এবং ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে মহিবুর রহমান তুহিন কাউন্সিলর পদে জয়লাভ করেছেন।
জামায়াতের ইসলামীর নেতা কাজী গোলাম কিবরিয়া ১ নম্বর ওয়ার্ডে এবং একরাম হোসেন বাবু ৮ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে জয়লাভ করেছেন।
সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের নেত্রীরা যেসব ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন তারা হলেন- ১ নম্বর সংরক্ষিত আসনে কাউছারা বেগম সুমি, ২ নম্বরে নাদিয়া নাসরিন, ৩ নম্বরে উম্মে কুলসুম, ৫ নম্বরে নূর জাহান আলম পুতুল, ৬ নম্বরে নেহার বেগম, ৮ নম্বরে ফারহানা পারভিন এবং ৯ নম্বরে শাহিন আক্তার।
এ ছাড়া ৪ নম্বর আসনে বিএনপির রুমা আক্তার এবং ৭ নম্বর আসনে জামায়াতের তাহমিনা আক্তার বিজয়ী হয়েছেন।
নির্বাচনে মেয়র পদে জয়লাভ করেছেন আওয়ামী লীগের আরফানুল হক রিফাত।
ঘোষিত ফলাফলে বলা হয়, ১০৫ কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩১০ ভোট। বিদায়ী মেয়র সাক্কু টেবিল ঘড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৯৬৭ ভোট। তৃতীয় স্থানে থাকা নিজাম উদ্দিন কায়সার ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২৯ হাজার ৯৯ ভোট।
আরও পড়ুন: