রূপপুরের পরমাণু চুল্লিপাত্র খালাস হচ্ছে মোংলায়

রাশিয়া থেকে দেশে এসে পৌঁছানো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের নিউক্লিয়ার রি-অ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল বা চুল্লিপাত্র এবং স্টিম জেনারেটর খালাসের কাজ শুরু হয়েছে বাগেরহাটের মোংলা বন্দরে।

খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2020, 04:08 PM
Updated : 21 Oct 2020, 04:08 PM

এমভি ডেইজি নামে লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী একটি জাহাজ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের এসব সরঞ্জাম নিয়ে মঙ্গলবার বিকালে মোংলা বন্দরে পৌঁছায়।

বুধবার সকালে মোংলা বন্দরের ৯ নম্বর জেটিতে ওই জাহাজ থেকে সেসব যন্ত্রাংশ খালাসের কাজ শুরু হয় বলে সরবরাহের দায়িত্বে থাকা কোম্পানি স্বদেশ শিপিং লাইন কর্তৃপক্ষ  জানায়।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, “রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সকল যন্ত্রাংশ মোংলা বন্দর দিয়েই খালাস হবে। বর্তমানে প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের মূল যন্ত্রাংশ খালাস করা হচ্ছে।”

বাংলাদেশের প্রথম এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি রোসাটম। 

রাশিয়ার ভোলগোদোনস্কে রোসাটমের যন্ত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাটোমেনারগোম্যাশে ওই ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল এবং স্টিম জেনারেটর তৈরি করা হয়েছে।

৩৩৩ দশমিক ৬ টন ওজনের ওই প্রেসার ভেসেল এবং ৩৪০ টন ওজনের স্টিম জেনারেটর নিয়ে কৃষ্ণসাগর ও সুয়েজখাল হয়ে ১৪ হাজার কিলোমিটার সমুদ্রপথ অতিক্রম করে বাংলাদেশে পৌঁছায় এমভি ডেইজি।

মূল জাহাজ থেকে খালাসের পর রি-অ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল নিয়ে আরেকটি জাহাজ পাবনার রূপপুরের উদ্দেশে যাত্রা করবে। বাকি যন্ত্রাংশ প্রকল্প এলাকায় পৌঁছাবে সড়ক পথে।

এডমিরাল শাহজাহান বলেন, “এসব পণ্য যাতে ঠিকমত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পৌঁছায় সে ব্যাপারে বন্দরের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করা হচ্ছে।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর রোসাটমের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশের পরমাণু শক্তি কমিশন।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে একনেকর বৈঠকে বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড ব্যয়ের এই প্রকল্পে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। পরের বছর ৩০ নভেম্বর রূপপুরে নিউক্লিয়ার রি-অ্যাক্টরের জন্য কংক্রিটের মূল স্থাপনা নির্মাণের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরের বছর জুলাইয়ে দ্বিতীয় চুল্লির নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

কাজ শুরুর ৬৮ মাসের মধ্যে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল স্থাপনা নির্মাণের কথা রয়েছে রাশিয়ার কোম্পানি অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের।

সরকার আশা করছে, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রথম ইউনিটের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে দেওয়া সম্ভব হবে। পরের বছর চালু হবে সমান ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিট।