যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারী তত্ত্বাবধায়কও বরখাস্ত

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তিন কিশোর নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার সহকারী তত্ত্বাবধায়ক (প্রবেশন অফিসার) মো. মাসুম বিল্লাহকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 August 2020, 08:25 AM
Updated : 17 August 2020, 09:03 AM

রোববার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বলা হয়, মাসুম বিল্লাহ যেহেতু গ্রেপ্তার হয়ে আদালতের নির্দেশে রিমান্ডে আছেন, সেহেতু সরকারি চাকরি বিধি অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হল।

কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদকেও এর আগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাটে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোরের মৃত্যু হয়, আহত হয় আরও অন্তত ১৫ জন।

শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ দাবি করে, বন্দি কিশোরদের দুই দলের সংঘর্ষে হতাহতের ওই ঘটনা ঘটে।

তবে আহত কিশোরদের ভাষ্য, কেন্দ্রের প্রধান নিরাপত্তা কর্মীর সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে কেন্দ্র কর্মকর্তা, আনসার সদস্য ও তাদের ‘অনুগামী’ কয়েকজন কিশোরের মারধরে হতাহতের এ ঘটনা ঘটেছে।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অমিয় দাসের ভাষ্য, ঘটনার দিন দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে তিনটি মরদেহ আসে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে। তাদের একজনের মাথায় ভারী কোনো বস্তু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। অন্যদের শরীরের বাহ্যিক আঘাতের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি।

আহতদের বক্তব্যের ভিত্তিতে কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ও এক কিশোরসহ ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পরে ঘটনা তদন্তে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজসেবা অধিদপ্তর।

নিহত তিন কিশোরের মধ্যে একজনের বাবা শুক্রবার রাতে যশোর কোতয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেখানে নাম উল্লেখ না করে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসামি করা হয়।  

এরপর কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ সাময়িক বরখাস্ত করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। শুক্রবার রাতেই মাসুদ, মাসুম বিল্লাহসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার বাকিরা হলেন- কেন্দ্রের সাইকোসোশ্যাল কাউন্সিলর (প্রবেশন অফিসার) মুশফিকুর রহমান, শরীরচর্চার শিক্ষক ওমর ফারুক ও কারিগরি শিক্ষক শাহানুর আলম।

পরদিন আদালতে তোলা হলে বিচারক গ্রেপ্তার পাঁচজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। 

যশোর কেন্দ্রে মোট বন্দির সংখ্যা ২৮০ জন বলে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। যশোরের এ কেন্দ্রে লাশ উদ্ধার ও মারধরের ঘটনা এর আগেও ঘটেছে।

দায়িত্বে অবহেলা ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন্য সুপারিশও করেছিল।