যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র: সহকারী পরিচালকসহ গ্রেপ্তার ৫

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোর নিহতের মামলায় কেন্দ্রের বরখাস্ত হওয়া সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

যশোর প্রতিনিধবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 August 2020, 06:56 AM
Updated : 17 August 2020, 08:39 AM

গ্রেপ্তার বাকিরা হলেন- কেন্দ্রের সহকারী  তত্ত্বাবধায়ক মাসুম বিল্লাহ, সাইকোসোশ্যাল কাউন্সিলর (প্রবেশন অফিসার) মুশফিকুর রহমান, শরীরচর্চার শিক্ষক ওমর ফারুক ও কারিগরি শিক্ষক শাহানুর আলম।

বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাটে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোরের মৃত্যু হয়, আহত হয় আরও অন্তত ১৫ জন। এ ঘটনায় কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ও এক কিশোরসহ ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এ ঘটনা তদন্তে দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজসেবা অধিদপ্তর।

যশোরের পুলিশ সুপার মো. আশরাফ হোসেন জানান, কয়েকজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর পাঁচজনকে শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের নিহতরা হলেন- বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ছোলিবপুর পূর্বপাড়ার নান্নু পরামানিকের ছেলে নাইম হাসান (১৭), খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা দক্ষিণপাড়ার রোকা মিয়ার ছেলে পারভেজ হাসান (১৮) ও বগুড়ার শেরপুরের মহিপুর গ্রামের নূরুল ইসলাম নুরুর ছেলে রাসেল ওরফে সুজন।

এর আগে শুক্রবার রাতে নিহত পারভেজ হাসানের বাবা রোকা মিয়া যশোর কোতয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।যার নম্বর ৩৫। মামলায় তিনি অজ্ঞাত কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করেন বলে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা যশোরের চাঁচড়া ফাঁড়ি ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রোকিবুজ্জামান জানান।

শুক্রবার রাতে জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে হতাহতের ঘটনায় সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে সাময়িক বরখাস্ত করার খবর  জানান।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অমিয় দাসের বর্ণনায়- ঘটনার দিন দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে তিনটি মরদেহ আসে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে। সন্ধ্যা ৬টা ৩৮ মিনিটে নাইম হাসান, সাড়ে ৭টায় পারভেজ হাসান এবং রাত ৮টায় আসে রাসেলের মরদেহ।

এক জনের মাথায় ভারী কোনো বস্তু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। অন্যদের শরীরের আঘাতের কোনো ইচহ্ন এখনও শনাক্ত হয়নি বলে এ চিকিৎসক জানিয়েছিলেন।

শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ এ ঘটনা বন্দি কিশোরদের দুই দলের সংঘর্ষ বলছে। তবে আহত কিশোরদের ভাষ্য, কেন্দ্রের প্রধান নিরাপত্তা কর্মীর সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে কেন্দ্র কর্মকর্তা, আনসার সদস্য ও তাদের ‘অনুগামী’ কয়েকজন কিশোরের মারপিটে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

যশোর কেন্দ্রে মোট বন্দির সংখ্যা ২৮০ জন বলে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।যশোরের এ কেন্দ্রে লাশ উদ্ধার ও মারধরের ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। দায়িত্বে অবহেলা ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন্য সুপারিশও করেছিল।