একলাখ টাকাসহ এ ঘটনায় গড়িত আরেক যুবক পলাতক রয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
শুক্রবার মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার সাজিদ হোসেন বোয়ালিয়া থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনার বর্ণনা দেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী নগরীর রাণীবাজার অলোকার মোড়ে একটি মোবাইল শো-রুমের এই টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করে প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন কর্মচারী।
ওইদিন রাতেই রাজশাহীর দামকুড়া থানার হরিপুর গ্রামের মৃত হাসান আলীর ছেলে আরিফুল ইসলাম ওরফে ডলারের বাড়ি থেকে টাকাগুলো উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গ্রেপ্তার তিন যুবক হলেন নগরীর কর্ণহার থানার দারুসা সায়েরপুকুর এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান ফায়সাল (২৬), শাহ মখদুম থানার দক্ষিণ নওদাপাড়ার দুলাল হোসেনের ছেলে তাইজুল ইসলাম ওরফে ডলার (২৪) এবং দামকুড়া থানার হরিপুর গ্রামের মৃত হাসান আলীর ছেলে আরিফুল ইসলাম ওরফে ডলার (২৪)।
পলাতক রয়েছেন কাশিয়াডাঙ্গা থানার সেনপুকুরের আবদুল ওহাবের ছেলে অহিদুল ইসলাম (২২)।
এই ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে অঞ্জন কুমার রায় বাদী হয়ে বোয়ালিয়া থানায় মামলা করেছেন। মামলায় আটক তিন যুবককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
আসামিদের মধ্যে মেহেদী হাসান ফায়সাল ভিভোর শো-রুমের বিক্রয় প্রতিনিধি। তাইজুল ইসলাম ডলারও সেখানকার কর্মচারী। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে তিনি শো-রুমে কম আসতেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপ-কমিশনার সাজিদ হোসেন বলেন, ভিভোর শো-রুমের জন্য নতুন কিছু ফোন নিতে বৃহস্পতিবার ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার কথা ছিল। শো-রুমের প্রোইটর অঞ্জন কুমার রায় কর্মচারী মেহেদী হাসান এবং ডিস্ট্রিবিউশনের ম্যানেজার সোহেলকে টাকাগুলো ব্যাংকে জমা দিতে পাঠান। শো-রুম থেকে তিন-চার মিনিটের হাঁটা দূরত্বেই ডাচ বাংলা ব্যাংক।
“শো-রুম থেকে টাকা নিয়ে বের হয়ে রাস্তায় তারা যখন হাঁটা শুরু করেন তখন দুই যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে এসে মেহেদীর কাঁধে থাকা ব্যাগটি টান দিয়ে নিয়ে চলে যায়। এরপর বিষয়টি ছিনতাই বলে প্রচার করে মেহেদী। ঘটনার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে বুঝতে পারে এটা সাজানো নাটক।”
পুলিশ কর্মকর্তা সাজিদ বলেন, আরিফুল ইসলাম ও তাইজুল ইসলাম মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছিলেন। তারা দুজনেই মাথায় হেলমেট পরেছিলেন। পরনে ছিল রেইন কোট। মেহেদীর সঙ্গে তাদের আগে থেকেই পরিকল্পনা ঠিক ছিল। সে অনুযায়ী মোটরসাইকেলের পেছনে বসে তাইজুল টান দিয়ে টাকার ব্যাগ নেন। সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর আরিফুলকে টাকা দিয়ে পাঠিয়ে তাইজুল আবার মোটরসাইকেল নিয়ে ভিভোর শো-রুমের সামনে আসেন। সেখান থেকেই পুলিশ তাকে আটক করে। তখন মেহেদী হাসান ও সোহেলকেও আটক করা হয়।
“পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে প্রথমে তাইজুল স্বীকার করেন তারা পরিকল্পনা করেই টাকা নিয়ে গেছেন।”
পুলিশের এই উপ-কমিশনার বলেন, ঘটনার সময়ের ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় এতোগুলো টাকা নিয়ে চলে গেলেও প্রতিরোধের চেষ্টা করা হয়নি। তাছাড়া যারা টাকা নিয়ে যাচ্ছিলেন তারাও কোনো ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার ছাড়া খুব সহজেই মোটরসাইকেলে বসে টাকার ব্যাগ কাঁধ থেকে নিয়ে চলে যান। এ বিষয়টিই সন্দেহের সৃষ্টি করে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আবদুর রশিদ, রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস, বোয়ালিয়া থানার সহকারী কমিশনার ফারজিনা ইয়াসমিন, ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।