জাবি উপাচার্যের বাসভবন অবরোধ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে অপসারণের দাবিতে এবার তার বাসভবন অবরুদ্ধ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Nov 2019, 05:15 PM
Updated : 4 Nov 2019, 05:16 PM

সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে স্থাপিত 'উপাচার্য অপসারণ মঞ্চ' থেকে শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।

অন্যদিকে, উপাচার্য ভবনের গেইটের সামনে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন উপাচার্য সমর্থক অর্ধ শতাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী। 

এতে যেকোনো ধরনের সহিংসতা এড়াতে প্রায় ৩০ পুলিশ সদস্য উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছে।

তবে এ বিষয়ে পুলিশ কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি। 

আন্দোলনকারী শিক্ষকদের মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, "আমরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছি। তিনি অপসারিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই অবস্থান চলবে।"

ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহাথির মুহাম্মদ বলেন, "আমরা উপাচার্যকে পদত্যাগের সময় দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের কথায় কর্ণপাত করলেন না। আমরা আজকের অবস্থানে একদিনে আসি নাই। বরং অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম এই অবস্থানে আসতে বাধ্য করেছেন। আমরা আজকে অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে অবরুদ্ধ করেছি। তিনি এই জাহাঙ্গীরনগর ছেড়ে যাওয়া না পর্যন্ত আমরা তাকে অবরুদ্ধ করে রাখব।”

অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম যখন বাসভবন ছাড়বেন তখন তিনি আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকবেন না বলে মনে করেন মাহাথির।

প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি-শৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটে এমনটা আমরা কখনও চাই না। আমরা তাদের অনুরোধ করেছি সরে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তারা বলেছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এখানেই অবস্থান করবে। আমরা বিশ্বিবদ্যালয়ের প্রায় একশ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী এখানে আছি। পরিস্থিতি শান্তু রাখার চেষ্টা করছি।"

সংকট সমাধানে শিক্ষামন্ত্রী নিজে উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি আলোচনার কথা বলেছেন উল্লেখ করে প্রক্টর বলেন, “আমরা চাইব সেই আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধান হবে।"

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি উন্নয়ন প্রকল্পের দরপত্র ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এরপর ‘ঈদ সেলামির’ নামে ছাত্রলীগের দুই কোটি টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠলে তিন দফা দাবিতে গত ২৩ অগাস্ট থেকে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।

কয়েকদিন আন্দোলন চলার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওই আলোচনায় আন্দোলনকারীদের দুটি দাবি মেনে নিলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রকল্পের টাকা নিয়ে দুর্নীতির তদন্তের দাবি পূরণ করেনি। এরপর ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়।