বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব ভবনে সাপ্তাহিক কোর্সের ক্লাস-পরীক্ষা হয় শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে সেসব ভবনের ফটক বন্ধ করে অবস্থান নেয় আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ সময় ক্লাস করতে আসা শিক্ষার্থীদের ফিরে যেতে হয়।
এছাড়া এদিন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে স্থাপন করা ‘উপাচার্য অপসারণ মঞ্চে’ অবস্থান করতে দেখা গেছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ১ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় একনেক। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজের জন্য এ বছরের ১ মে ৬টি হলের দরপত্র আহ্বান করে কর্তৃপক্ষ। কাজের শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে দরপত্র ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠে।
এরপর ছাত্রলীগকে ‘ঈদ সেলামির’ নামে দুই কোটি টাকা চাঁদা দেওয়ার অভিযোগ উঠলে তিন দফা দাবিতে গত ২৩ অগাস্ট থেকে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।
কয়েকদিন আন্দোলন চলার পরে গত ১২ সেপ্টেম্বর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওই আলোচনায় আন্দোলনকারীদের দুটি দাবি মেনে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে প্রকল্পের টাকা নিয়ে দুর্নীতির তদন্তের দাবি না মানায় ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে নামেন আন্দোলকারীরা।
“কারো কারো এতে সাময়িক অসুবিধা হয়তো হচ্ছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘমেয়াদের মঙ্গলের জন্য সবাইকে এ আন্দোলনে সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানাবো।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন নীলাঞ্জন কুমার সাহা বলেন, “উইকেন্ড কোর্সের ক্লাস করতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এসেছিলেন। আমরা আন্দোলনকারীদের অনুরোধ করেছিলাম ক্লাস করতে দিতে, কিন্তু তারা না মানায় ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়নি।”
ইংরেজি বিভাগের সভাপতি লাইজু নাসরীন বলেন, “ধর্মঘট কর্মসূচির কারণে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আমার বিভাগে গতকালই উইকেন্ড কোর্সের ক্লাস না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এজন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কেউ ক্লাস করতে আসেনি।”
এদিকে আন্দোলনের এই ছয়দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম ছিল। এছাড়া উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, নিবন্ধকসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা কেউই তাদের কার্যালয়েও যাননি।