মধুমতীতে দুই ঘণ্টায় ৮ বাড়ি বিলীন

গোপালগঞ্জে মধুমতী নদীর ভাঙনে প্রতিদিনই বসতবাড়ি, গাছপালা, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জনপ্রতিনিধিরা।

মনোজ সাহা গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 August 2019, 06:18 AM
Updated : 21 August 2019, 06:45 AM

এর মধ্যে গত শনিবার সদর উপজেলার ইছাখালী গ্রামে মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে আটটি বাড়ি বিলীন হয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

ওই গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক ৭০ বছর বয়সী এনায়েতুল হক মোল্লা বলেন, “নদী ভাঙ্গন শুরু হলে দুই ঘণ্টার মধ্যেই আটটি পরিবারের বাড়িঘর নদীতে চলে যায়। স্থানীয়রা এগিয়ে এসেও তাদের ঘরের কোনো মালপত্র রক্ষা করতে পারেনি।

“গত ১১ বছরে নদীভাঙ্গনের শিকার অনেক পরিবার রাস্তার পাশে বা চরে আশ্রয় নিয়েছে। প্রতিবছরই নদীর পানি হ্রাস-বৃদ্ধির সময় ভাঙছে নদীর পাড়। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রতিবছরই বাড়ছে।”

ইছাখালীর বিধবা রিভা বেগম (৬০) বলেন, “মুহূর্তের মধ্যি আমার বাড়িঘর গিলে খালো মধুমতী।”

ওই গ্রামের বাড়িঘর হারানো গৃহবধূ রাজিয়া বেগম (৪৫), নাছিমা বেগম (৪২), বাবর আলী শেখ (৭৫) বলেন, তারা এখন নিঃস্ব। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

জরুরি সহযোগিতা ছাড়া তাদের বেঁচে থাকার উপায় নেই বলে তারা জানান।

জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম সুপারুল আলম টিকে বলেন, “পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীভাঙ্গন প্রতিরোধে স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তারা একটা স্থায়ী  পদক্ষেপ নেবে বলে আমরা আশা করছি।”

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য বলেন, তারা জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের উদ্যোগ নিয়েছেন।

“দ্রুতই জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হবে। তাছাড়া স্থায়ীভাবে নদীর ৫০০ মিটার ভাঙন প্রতিরোধের প্রকল্প পাঠিয়েছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও মন্ত্রণালয় ঘুরে এটি এখন একনেকে পাসের অপেক্ষায় রয়েছে। পাস হলে শুস্ক মৌসুমে কাজ শুরু হবে।”

জালালাবাদ ইউনিয়নের ইছাখালি থেকে চরধলইতলা পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকায় মধুমতীতে ২০০৮ সালে ভাঙন শুরু হয়েছে। গত ১১ বছরে ইছাখালি, ডুবসি, চরঘাঘা, চরধলইতলা ও চরভুসাইল গ্রামের প্রায় ৩০০ পরিবার ৬০০ বিঘা ফসলি জমি, বসতবাড়ি, গাছপালা নদীতে বিলীন হয়েছে বলে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে।