আদালতের নির্দেশে চার বছর পর দাফন হল লাইজুর

দীর্ঘ চার বছর ধরে রংপুর মেডিকেল কলেজের হিমঘরে থাকার পর দাফন করা হয়েছে নীলফামারীর ডোমারের ধর্মান্তরিত নিপা রাণী ওরফে হোসনে আরা লাইজুকে।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 May 2018, 02:50 PM
Updated : 4 May 2018, 02:50 PM

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে শুক্রবার বিকালে উপজেলার বোড়াগাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব বোড়াগাড়ি কাজীপাড়ায় শ্বশুর বাড়িতে স্বামীর কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয় বলে ডোমার থানার পরির্দশক (তদন্ত) ইব্রাহিম খলিল জানান।

এরআগে দুই দফায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

নীলফামারীর ডোমার উপজেলার অক্ষয় কুমার রায়ের মেয়ে নিপা রানী ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর পালিয়ে যান একই উপজেলার জহুরুল ইসলামের ছেলে হুমায়ুন ফরিদ লাজুর সঙ্গে। এরপর ধর্মান্তরিত হয়ে লাজুকে বিয়ে করেন নিপা।

বিয়ের সময় নাম পরিবর্তন করে রাখেন মোছা. হোসনেয়ারা বেগম লাইজু। এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ২৮ অক্টোবর অপহরণ মামলা করে নিপার বাবা। স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ের কাগজপত্র আদালতে দিলে মামলাটি খারিজ করে দেয় আদালত। এরপর খারিজের বিরুদ্ধে আপিল করে মেয়েকে অপ্রাপ্তবয়স্ক ও মস্তিষ্ক বিকৃত বলে দাবি করেন অক্ষয় কুমার।

আদালত আবেদন আমলে নিয়ে মেয়ের শারীরিক পরীক্ষার জন্য রাজশাহী সেফহোমে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়। লাইজু সেফহোমে থাকা অবস্থায় ২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি আত্মহত্যা করে লাজু।

এরপর লাজুর আত্মহত্যার বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করে মেয়েকে জিম্মায় নেন অক্ষয় কুমার। ২০১৪ সালের ১০ মার্চ নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করেন নিপা ওরফে লাইজু।

পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে লাইজু তার পুত্রবধূ দাবি করে মুসলিম নিয়মে তার সৎকারের দাবি জানান লাজুর বাবা জহুরুল ইসলাম।

লাশ বাবা ও শ্বশুর পরিবারের মধ্যে লড়াই আদালতে গড়ায়। এমন জটিলতায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয় লাইজুর লাশ।চলতি বছরের ১২ এপ্রিল মৃতদেহটি মুসলিম রীতি অনুযায়ী দাফনে নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত।

ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা বলেন, “উচ্চ আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে আমার উপস্থিতিতে শুক্রবার সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘর থেকে লাইজুর লাশ গ্রহণ করেন তার শ্বশুর। এরপর আমার উপস্থিতিতে দাফন সম্পন্ন হয়।”