যুদ্ধাপরাধ মামলার সাক্ষী, জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি ও মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলার পিপি রথিশচন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনাকে উদ্ধারের দাবিতে রংপুরে বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
Published : 01 Apr 2018, 03:18 PM
একই দাবিতে রংপুরের আইনজীবীরা রোববার তিন ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন।
শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে পাজামা-পাঞ্জারি পরে এক ব্যক্তির সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি থেকে বেন রথিশ। এরপর তিন দিনেও তার কোনো সন্ধান দিতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
রথিশচন্দ্রকে উদ্ধারের দাবিতে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, ডিমলা শ্রী শ্রী শীতলা মন্দির, রংপুর শ্রী শ্রী নিগমানন্ধ সারস্বত সংঘ, শারদাঞ্জলী ফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা রোববার সকালে রংপুর প্রেসক্লাবে সামনে মানববন্ধন করেন।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের জেলা সভাপতি বনমালী পাল বলেন, “রথিশচন্দ্র কোথায় আছেন আমরা জানি না। বেশ কিছুদিন ধরে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।”
তিনি বলেন, শনিবার তারা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন। রোববারের মধ্যে রথিশচন্দ্রকে উদ্ধার না হলে সোমবার তারা কঠোর কর্মসূচি দেবেন।
অন্যদের মধ্যে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট কমল মজুমদার, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুব্রত সরকার মুকুল অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেন।
সরকারি কৌঁসুলি হিসেবে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি এবং মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলা পরিচালনা করেছিলেন তিনি।
এছাড়া তিনি জামায়াত ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একাত্তরের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধ মামলার সাক্ষী।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজহারুলের ফাঁসির রায় হওয়ার পর বর্তমানে মামলাটি আপিল বিভাগে রয়েছে।
রথিশচন্দ্রকে উদ্ধারের দাবিতে রংপুর আইনজীবী সমিতির সদস্যরা সকাল ৯টা থেকে তিন ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন।
পরে আদালত চত্বরে এক মানববন্ধনে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুল আইয়ুম মণ্ডল, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক বক্তব্য দেন। আইনজীবীরা মানববন্ধন শেষে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিলও করেন।
এছাড়া জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যানারে নগরীর সকল সাংস্কৃতিক সংগঠন সকালে রংপুর টাউন হলের সামনে সমাবেশ করে। এতে জোটের সভাপতি সাখাওয়াত রাঙ্গা, সাবেক সভাপতি কাজী মো. জুন্নুন বক্তব্য দেন। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় একঘণ্টা ঘেরাও করেন তারা।
স্মারকলিপি গ্রহণ করে জেলা প্রশাসক এনামুল হাবীব বলেন, “অ্যাডভোকেট রথিশচন্দ্রকে উদ্ধারের সর্বাত্মক আমরা চেষ্টা করছি। সকালে স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালায় এ বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চেয়েছে।”
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, রথিশের উদ্ধারের ব্যাপারে যা যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, তাই করা হচ্ছে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও কাজ করছে।