সেখানে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে বলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আইন কর্মকর্তা এজিএম সাত্তার মঙ্গলবার সকালে সদর মডেল থানায় ওই অভিযোগ দাখিল করেন।
সংঘর্ষে সময় অস্ত্র হাতে যে নিয়াজুলের ছবি গণমাধ্যমে এসেছে, তার পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজামসহ নয় জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও হাজারখানেক মানুষকে সেখানে আসামি করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন সম্প্রতি ফুটপাত দখলমুক্ত করতে নামলে হকারদের পক্ষে নেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান। হকারদের বসতে না দিলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তিনি।
ওই ঘটনার সময় নিয়াজুলসহ কয়েকজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা যায়। আইভীর সমর্থকদের অভিযোগ, নিয়াজ সেদিন গুলিও ছুড়েছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আইভীর দাবি, তাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই সেদিন হামলা চালানো হয়েছিল এবং এর পেছনে ছিলেন শামীম ওসমান।
অন্যদিকে নগর আওয়ামী লীগের নেতা শামীমের দাবি, সংঘর্ষ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে হকারদের; আইভীর সঙ্গে তার ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই।
সেদিন নিয়াজুলের উপর হামলা হলে আত্মরক্ষায় নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল বের করেছিলেন তিনি, তবে কোনো গুলি ছোড়েননি বলেও দাবি করেন শামীম।
অস্ত্র হাতে নিয়াজুলের ছবি নিয়ে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়। পুলিশ সুপার মঈনুল হক সে সময় বলেন, অস্ত্রধারী নিয়াজুলকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। পুলিশ তাকে খুঁজছে।
আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, “অস্ত্রধারীদের ভিডিও ফুটেজ দেখে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা কাউকে ছাড়ব না।”
এদিকে সংঘর্ষের এক দিন বাদে গত ১৮ জানুয়ারি নিজের কার্যালয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে আইভীকে ঢাকায় এনে ল্যাবএইড হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। চার দিন সেখানে চিকিৎসা নেওয়ার পর মঙ্গলবার দুপুরে তার নারায়ণগঞ্জে ফেরার কথা রয়েছে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জের দুই প্রভাবশালী নেতার ‘ব্যক্তিগত বিরোধ’ মেটাতে তাদের ঢাকায় ডাকা হয়েছে বলে সংঘর্ষের পরদিন জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তবে কবে কোথায় তাদের নিয়ে বৈঠক হবে, সে বিষয়ে পরে আর কোনো তথ্য দেননি আওয়ামী লীগ নেতারা।
অভিযোগ আনা নিয়াজুল ছাড়া অন্য অটজন হলেন - মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ্ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন, জানে আলম বিপ্লব, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, নাসির উদ্দিন ওরফে টুন্ডা নাসির, চঞ্চল মাহমুদ।