কোচিংয়ের প্রশ্নপত্রে স্কুলের পরীক্ষা: শিক্ষক বরখাস্ত

কোচিংয়ের প্রশ্নপত্রে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এক খণ্ডকালীন শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2017, 10:14 AM
Updated : 15 Dec 2017, 10:17 AM

আইসিটি বিষয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক শেখ মো. বেল্লাল হোসেনকে বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক শেখ মো. বেল্লাল হোসেনকে বরখাস্ত করা হয় বলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মতিন হাওলাদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

সেইসঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বাগেরহাট মডেল থানায় পাবলিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

গত ৯ ডিসেম্বর বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় খণ্ডকালীন শিক্ষক বেল্লাল হোসেন পরিচালিত কোচিং সেন্টারের মডেল টেস্টের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

এ ঘটনা তদন্তে স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এতে বেল্লাল হোসেনের জড়িত থাকার সত্যতা পেয়ে তাকে চাকরিচ্যুতির সুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির সদস্যরা।

বিষয়টি নিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম মঙ্গলবার সংবাদ প্রকাশ করেছে।

তবে এ বিষয়ে কথা বলতে বেল্লাল হোসেনের মোবাইল ফোনে চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন বলেন, শিক্ষা অধিদপ্তর মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে আইসিটি বিষয় চালু করে প্রধান শিক্ষককে ওই পদে নিয়োগের ক্ষমতা দেয়।ওই ক্ষমতা বলে প্রায় দেড় বছর আগে স্কুলের প্রভাতি ও দিবা শাখায় দুজন খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়।

“গত ৯ ডিসেম্বর স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়’ পরীক্ষায় খণ্ডকালীন শিক্ষক বেল্লাল হোসেনের কোচিং সেন্টারে অনুষ্ঠিত মডেল টেস্টের প্রশ্নপত্রে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার অভিযোগ উঠলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।ওই কমিটি তদন্তে সত্যতা পেয়ে স্কুলের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে তাকে চাকরিচ্যুতির সুপারিশ করে।”

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার ওই তদন্ত প্রতিবেদন বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাসের কাছে জমা দেওয়া হলে তিনি নিয়ম মেনে বেল্লালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন। এছাড়া টিচার্স কাউন্সিলের জরুরি সভায়ও একই দাবি ওঠে।

নিয়োগ বিধি মেনে তাকে চাকরিচ্যুত ও বাগেরহাট মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে বলে আব্দুল মতিন জানান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাগেরহাট মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার দুপুরে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন হাওলাদার বাদী হয়ে ১৯৮০ সালের পাবলিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ আইনে বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং আসামিকে ধরতে অভিযান চলছে বলে এ পুলিশ কর্মকর্তা জানান।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, শিক্ষক বেল্লাল হোসেন প্রশ্নপত্র ফাঁস করে যে অপরাধ করেছেন তা ক্ষমার অযোগ্য। তাই তাকে শুধু চাকরিচ্যুত করলেই হবে না; ভবিষ্যতে কোন শিক্ষক যাতে এ ধরনের অপরাধ আর করতে না পারে সেজন্য তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।