মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার কারণে কক্সবাজারে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ চেষ্টাকারী ৪৭৫ রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।
Published : 28 Aug 2017, 09:37 PM
বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম আরিফুল ইসলাম জানান, সোমবার সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত টেকনাফের নাফ নদীর হোয়াইক্যং, উনচিপ্রাং ও উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে তাদের ফেরত পাঠানো হয়।
অনুপ্রবেশ চেষ্টাকারীদের অধিকাংশই নারী ও শিশু বলে জানান তিনি।
এরআগে রোববার মধ্যরাত থেকে সোমবার ভোর ৬টা পর্যন্ত বান্দরবানের ঘুমধুম, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে নাফ নদীর বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় শূন্যরেখা থেকে বিজিবি ২২৪ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠিয়েছিল বলে বিজিবি ও পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন।
এ সময় রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে সহায়তার অভিযোগে এক রোহিঙ্গাসহ দুই দালালকে আটক করে উখিয়া থানা পুলিশ।
বিজিবি কর্মকর্তা আরিফুল বলেন, এসব রোহিঙ্গারা অন্তত ১০ থেকে ১৫টি নৌকায় করে নাফ নদীর শূন্যরেখা পার হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিল।বিজিবির সদস্যরা তাদের মানবিক সহায়তা দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে।
সীমান্ত দিয়ে কোনোভাবে যেন রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করতে না পারে এ বিষয়ে বিজিবির সদস্যরা কড়া অবস্থান নিয়েছে বলে জানান আরিফুল।
এরআগে উখিয়া ও টেকনাফের নাফ নদীর বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় বৃহস্পতিবার ১৪৬ জন, শুক্রবার ৭৩ জন, শনিবার ৭১ জন ও রোববার ৯২ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হয়।
গত বৃহস্পতিবার রাতে রাখাইনে একসঙ্গে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, ওই রাতের পর থেকে এ পর্যন্ত ৯৮ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ১২ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।
আরও সহিংসতার আশঙ্কায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা নাফ নদী ও স্থল সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে। সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ অংশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষীদের গুলি করার ঘটনাও ঘটেছে।
প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের শিকার হয়ে কয়েক দশকে ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে। বৌদ্ধপ্রধান মিয়ানমারের সরকার রোহিঙ্গা মুসলিমদের নাগরিক মানতে নারাজ।
গত বছর রাখাইনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চৌকিতে হামলার পর ফের রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ পানে ছুটে। তখনও সীমান্ত বন্ধ রাখলেও মানবিক কারণে কিছু সংখ্যককে ঢুকতে দেওয়া হয়, যে সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি।