“জনগণের ক্ষতি সাধন করে ব্যক্তিগত বাড়িতে এগুলো স্থাপন করে ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে।”
Published : 18 Mar 2025, 04:58 PM
মসজিদের মালামাল আত্মসাতের তদন্তে নেমে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানের বাড়িতে সরকারি টাকায় নির্মিত তিন প্রকল্পের সন্ধান পেয়েছে দুদক।
গাজী গোলাম মোস্তফা নামের ওই আওয়ামী লীগ নেতা উপজেলার পাটগাতি ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গা মধ্যপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন।
এ কাজে গোপালগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক চন্দ্র তালুকদারের সংশিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (ডিডি) মো. মশিউর রহমান জানান।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য।
প্রকল্পগুলো হল- ৩১ লাখ ১০ হাজার ৫১৯ টাকা ব্যয়ে পানির লবণাক্ত দূরীকরণ প্লান্ট, ২ লাখ টাকার স্ট্রিট লাইট ও লক্ষাধিক টাকার একটি ঘাটলা।
দুদক কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, “সোমবার গিমাডাঙ্গা মধ্যপাড়া গ্রামে ‘গাজী বাড়ি জামে মসজিদের’ জন্য বরাদ্দ সরকারি ৫ লাখ টাকাসহ এয়ার কন্ডিশনার (এসি), সোলার প্যানেল ও অন্যান্য সরাঞ্জাম আত্মসাতের অভিযোগে দুদক এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে। এনফোর্সমেন্টের অভিযানের সময় অভিযোগের সত্যতা মেলেনি।
“পরে ওই মসজিদের দুটি নষ্ট এসির খোঁজ করতে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফার গিমাডাঙ্গা মধ্যপাড়া গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালায় দুদকের ওই টিম। সেখানে সরকারি চারটি স্ট্রিট লাইট, পল্লী অঞ্চলে পানি সরবরাহ প্রকল্পের রিভার্স অসমোসিস (অরও) প্ল্যান্ট ও একটি বাঁধানো ঘাটের সন্ধান পান টিমের সদস্যরা।”
মশিউর বলেন, “২০১৭ সালের ২৯ নভেম্বর গোপালগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক চন্দ্র তালুকদার পল্লী জনগণকে বঞ্চিত করে গাজী গোলাম মোস্তফার গিমাডাঙ্গা গ্রামের বাড়িতে ৩১ লাখ ১০ হাজার ৫১৯ টাকা ব্যয়ে রিভার্স অফমোসিস (আরও) প্লান্ট নির্মাণ করে দেন। এ ছাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস দুই লাখ টাকা মূল্যের চারটি স্ট্রিট লাইট স্থাপন ও লক্ষাধিক টাকার একটি পুকুর ঘাট ওই বাড়িতে করে দেয়।
“সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত বাড়িতে ৩ প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে গাজী গোলাম মোস্তফা, নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক চন্দ্র তালুকদার ও উপজেলা পিআইও অফিসের প্রকৌশলীরা জড়িত থাকার সত্যতা মিলেছে। জনগণের ক্ষতি সাধন করে ব্যক্তিগত বাড়িতে এগুলো স্থাপন করে ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে।”
দুদকের ওই কর্মকর্তা বলেন, “এতে দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। তাই দুদক থেকে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিষয়টি দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত আকারে পাঠানো হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এ বিষয়ে জানতে গাজী গোলাম মোস্তফার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। তার বাড়িতে গিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি।