৫৪ জন কনস্টেবল নিয়োগে এক কোটি ৬৯ লাখ ১০ হাজার হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
Published : 11 Jul 2024, 11:46 PM
কনস্টেবল নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় মাদারীপুরের সাবেক পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে দুদক।
সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম বৃহস্পতিবার মাদারীপুর জেলা দায়রা জজ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন এবং আদালত তা গ্রহণ করেছে বলে জানান দুদকের মাদারীপুরের সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আতিক রহমান।
অন্য আসামিরা হলেন- কনস্টেবল (সাময়িক বরখাস্ত ও পলাতক) মো. নুরুজ্জামান সুমন, কনস্টেবল (সাময়িক বরখাস্ত) জাহিদুল ইসলাম, মাদারীপুর জেলা পুলিশ হাসপাতালের সাবেক মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট পিয়াস বালা এবং মাদারীপুরের সাবেক টিএসআই (টাউন সাব-ইন্সপেক্টর) গোলাম রহমান।
তাদের বিরুদ্ধে কনস্টেবল নিয়োগে এক কোটি ৬৯ লাখ ১০ হাজার হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। সাবেক পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার পলাতক রয়েছেন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে ছয় হাজার ৮০০ জন পুরুষ এবং দুই হাজার ৮৮০ জন নারীসহ মোট নয় হাজার ৬৮০ জন নিয়োগের জন্য ২০১৯ সালের ২৮ মে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তাতে মাদারীপুর জেলায় সাধারণ পুরুষ ১৬ জন ও সাধারণ নারী তিনজন এবং বিশেষ কোটায় ১৫ জন পুরুষ ও ২০ জন নারীসহ মোট ৫৪ জন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।
নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়। ওই নিয়োগ কমিটির সভাপতি ছিলেন তৎকালীন পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার। অপর দুই সদস্য হলেন- মাদারীপুর জেলার তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নাজমুল ইসলাম ও গোপালগঞ্জ জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাসুদ।
মাদারীপুর জেলায় কনস্টেবল পদে লোকবল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রথম ধাপে শারীরিক মাপের পরীক্ষা ২০১৯ সালের ২২ জুন অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় ধাপে একই বছরের ২৩ জুন লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেন সুব্রত কুমার। যাদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করা হয়েছে তাদের পরীক্ষার খাতায় বিশেষ সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। সেই সব খাতায় অতিরিক্ত নম্বর প্রদান করা হয়।
ওই বছরের ২৬ জুন পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়। এতে ৫৪ জন কনস্টেবল নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।
এই নিয়োগ চলাকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অবৈধ ঘুষ লেনদেনের ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছয়টি ধাপে জব্দ করা হয়। বিষয়টি পুলিশ সদর দপ্তর প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে সত্যতা থাকায় আদালতের মাধ্যমে সেটা দুদকে পাঠায়।
দুদকের অনুসন্ধান এবং তদন্তে বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়। পরবর্তীতে দুদক এক কোটি ৬৯ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের তথ্য প্রমাণ পায়। দুদকের এই মামলায় পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপকসহ ৫০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে বলে মামলায় বলা হয়েছে।