২০০০ সালের ২৫ মার্চ নিখোঁজের দুই দিন পর শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয় বলে জানান পিপি।
Published : 10 Jul 2024, 05:14 PM
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় ৪ বছরের এক শিশুকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বুধবার জয়পুরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নুরুল ইসলাম তিন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল।
দণ্ড পাওয়ারা হলেন- উপজেলার হিন্দা গ্রামের গ্রামের ইউসুফ আলী ফকিরের ছেলে একাব্বর হোসেন (৫৬), সোলাইমান আলীর দুই ছেলে আব্দুল মতিন (৫৫) ও শফিকুল ইসলাম (৪৯) এবং কালাই উপজেলার তোফাজ্জল হোসেন (৫৫)। তাদের মধ্যে একাব্বর মালেশিয়ায় পলাতক আছেন।
মামলার বরাতে নৃপেন্দ্রনাথ জানান, ২০০০ সালের ২৫ মার্চ হিন্দা গ্রামের মাসুদুর রহমান দুলালের ছেলে রিয়াদ বাড়ির পাশ থেকে নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হয়। শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছে বলে পরে জানা যায়।
ঘটনার এক পর্যায়ে অপহরণকারী রিয়াদের মামা তৌফিকুল ইসলাম তালুকদার বেলালের কাছে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ১০ হাজার টাকা নেয় বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসী পাহারা বসিয়ে শিশুটিকে খুঁজতে থাকেন। এক পর্যায়ে অপহরণকারীরা প্রমাণ নষ্ট করতে রিয়াদকে শ্বাসরোধে হত্যা করে নির্জন স্থানে ফেলে পালিয়ে যায়। ২৭ মার্চ শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় শিশুটির মামা বর্তমান জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক তৌফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ক্ষেতলাল থানায় মামলা করেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিদের যাবজ্জীবনের পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়; যা অনাদায়ে তাদের আরও দুই বছর কারাবাসে থাকতে হবে বলেন জানান পিপি।
শিশুটির মামা বেলাল তালুকদার বলেন, “নিখোঁজ হওয়ার আগে রিয়াদ আমার কাছে বোয়াল মাছ খেতে চেয়েছিল। আমি বগুড়া থেকে মাছও এনেছিলাম। তারপর ওর অপহরণ ও পরে লাশ পাই।”
নিরপরাধ শিশুকে যারা মারতে পারে তাদের মৃত্যুদণ্ড হলে স্বজনরা খুশি হত বলে জানান তিনি।
রিয়াদের বাবা মাসুদর রহমান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “বেঁচে থাকলে আমার বাজানের বয়স হত ২৮ বছর। হয় তো বিয়ে দিতাম, দাদু হতাম, কতই না শখ ছিল। ওরা মাসুম শিশুটিকেও বাঁচতে দেয়নি। ওদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলেও শান্তি পেতাম না।”
আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন রফিকুল ইসলাম তালুকদার ও রাব্বিউল হাসান মোনেম। এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান।