শিক্ষার্থী মাসুদ অনুষ্ঠানে যেতে অস্বীকৃতি জানালে ছাত্রলীগ কর্মী তুষার তাকে চড় মারে বলে অভিযোগ রয়েছে।
Published : 16 Dec 2022, 08:44 PM
বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের ডাকাডাকিকে কেন্দ্র করে জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে এক ছাত্রলীগ কর্মীর মাথা ফেটে গেছে।
শুক্রবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট মাসুম হাওলাদার বলেন, “এ ঘটনায় প্রক্টর উজ্জল কুমারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, সকালে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সভাপতি লিটনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তুষার শিক্ষার্থীদের ডাকাডাকি করেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪তম ব্যাচের সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদের কক্ষে গিয়েও ডাক দেন। কিন্তু মাসুদ অনুষ্ঠানে যেতে অস্বীকৃতি জানালে তুষার তাকে চড় মারে বলে অভিযোগ রয়েছে। নাট্যকলা বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তুষার হলের ৪১৬ নম্বর কক্ষে থাকেন।
দুপুরে মাসুদ তার দলবল নিয়ে তুষারের কক্ষে গিয়ে হামলা চালায় এবং তাকে মারধর করে। এতে তুষারের মাথা ফেটে যায়। তাকে উদ্ধার করে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তার মাথায় দুটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। শরীরেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানান তুষারের সহপাঠীরা।
এ বিষয়ে সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ বলেন, “আমার নামে হলে কোনো কক্ষ বরাদ্দ না থাকায় আমার বিভাগের বড়ভাই রিপনের কক্ষে অবস্থান করছিলাম। ভোরে হলের তুষার ভাই আমার রুমে এসে আমাকে ঘুম থেকে তুলে চড়-থাপ্পর মারতে থাকে এবং আমাকে কক্ষ থেকে বের করে দেয়।”
তিনি দাবি করেন, “বের হয়ে আসার সময় দর্শন বিভাগের প্রান্ত ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের উৎসের সঙ্গে দেখা হলে তাদের ঘটনাটি জানাই। পরে তারা আমাকে নিয়ে অনুষ্ঠান শেষে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য তুষারের কক্ষে যায়। আমরা যাওয়ার পর তুষার কক্ষের দরজা বন্ধ করে আমাদের আটকে দেয়। পরে আমার বন্ধুদের ফোনে জানালে তারা এসে দরজা ভেঙে আমাকে উদ্ধার করে।“
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন, “এরা (মাসুদ) ছাত্রলীগের কেউ না, এরা দুষ্কৃতকারী। এমন হামলা আমরা মেনে নেব না। প্রশাসনকে আমরা জানিয়েছি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর বলেন, “বিজয় দিবসে যেখানে সারাদেশের বাঙালি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ; সেখানে আমার ক্যাম্পাসে এ ঘটনা দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”