আটজন ধর্ষণের পর হত্যা করে স্কুলছাত্রীর মরদেহ ঝুলিয়ে রাখে: পুলিশ

রাতে ঘর থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন ময়মনসিংহের স্কুলছাত্রী, পরদিন বাড়ির কাছে গাছে তার ঝুলন্ত মরদেহ মেলে।

ময়মনসিংহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2023, 12:18 PM
Updated : 4 March 2023, 12:18 PM

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে হত্যা করে মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে রাখার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাতে ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মেদ ভূঞা।

শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- মো. শাহজাহান (২৬), শহিদ মিয়া (৩৮), মাসুম বিল্লাহ ফজর আলী (২২), আলমগীর হোসেন (২৪), রাসেল মিয়া (১৯)। তারা সবাই ফুলবাড়িয়া উপজেলার রঘুনাথপুর ও পলাশপুর গ্রামের বাসিন্দা।

হত্যার শিকার ফাহিমা আক্তার (১৪) ফুলবাড়িয়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে। স্থানীয় বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এই ছাত্রী গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৭টার দিকে শৌচাগারে যেতে ঘর থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয়।

পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মেদ ভূঞা বলেন, সেদিন অনেক খোঁজাখুজি করেও ফাহিমার কোনো সন্ধান মেলেনি। পরদিন সকালে বাড়ি থেকে ২০০ গজ দূরে আমগাছে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখেন স্থানীয়রা।

পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদনের পর ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সুরতহালে ধর্ষণের আলামত মেলে।

এ ঘটনার পর ২৬ ফেব্রুয়ারি ওই কিশোরীর মা মোছা. হাসনা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করে ফুলবাড়িয়া থানায় মামলা করেন।

গ্রেপ্তারদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আরও বলেন, “ঘটনার রাতে শাহজাহান ওই স্কুলছাত্রীর বাড়ির পাশে ওত পেতে বসেছিলেন। ফাহিমা ঘর থেকে বের হলে তার মুখ চেপে ধরে আখক্ষেতে নিয়ে আটজন ধর্ষণ করে।

“প্রমাণ লোপাট করতে ধর্ষণের পর ফাহিমাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে তারা। এরপর তার মরদেহ বাড়ির পাশের আমগাছে ঝুলিয়ে রাখে।”

পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মেদ জানান, গ্রেপ্তাররা দিনে ইটভাটায় কাজ করত আর রাতে ধর্ষণসহ নানা অপরাধে লিপ্ত হত। তাদের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

এ ছাড়া শাহজাহান মিয়ার কাছ থেকে ফাহিমার মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

গ্রেপ্তার পাঁচজনের মধ্যে রাসেল মিয়া ও আলমগীর হোসেন শুক্রবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। অপর তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার।

মামলার বাদী মোছা. হাসনা বেগম বলেন, “কারো সঙ্গে আমাদের কোনো শত্রুতা ছিল না। মেয়ে মোবাইলেও কারও সঙ্গে কথা বলত না। কিন্তু কেন আমার মেয়ের সঙ্গে এমন হলো, আমরা এর সঠিক বিচার চাই।”