নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শফিকের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে তার লাশ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেন।
Published : 04 Oct 2024, 04:40 PM
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে নিহত পোশাক কর্মী শেরপুরের নকলা উপজেলার শফিক মিয়ার লাশ আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তোলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার গণপদ্দী ইউনিয়নের চিথলিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে লাশটি উত্তোলন করা হয় বলে শেরপুর জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল হালিম জানান।
পুলিশ ও শফিকের পরিবারের সদস্যরা জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ৪ অগাস্ট বিকালে নারায়াণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর সেনপাড়া এলাকায় শফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
খবর পেয়ে বাড়ির লোকজন ওইদিন রাতেই তার লাশ বাড়িতে নিয়ে যায়। পরদিন তাকে দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় শফিকের চাচাতো ভাই আবু হানিফ (৪০) বাদী হয়ে ২৩ অগাস্ট সোনারগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সিনিয়র সহকারী কমিশনার আব্দুল হালিম বলেন, ১১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শফিকের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে তার লাশ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুই মাস পর রকবর থেকে শফিকের মরদেহ তোলা করা হলো।
লাশ তোলার সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার এসআই ওলিয়ার রহমান, নকলা থানার এসআই আশরাউল আলমসহ পুলিশ সদস্য, নিহতের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
শফিক মিয়া (২৮) চিথলিয়া গ্রামের জুলহাস মিয়ার ছেলে এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানা এলাকায় ‘মিনা গার্মেন্টসের’ শ্রমিক ছিলেন। তিন কন্যা সন্তানের এ জনক দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে ছিলেন মেজো।
নিহত হওয়ার কিছুদিন আগে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকায় তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন শফিক। তার বাবা জুলহাস মিয়া পেশায় মাছ বিক্রেতা ছিলে। তিনি অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। ফলে শফিকের আয়েই চলতো এ পরিবারটি।
একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্যকে হারিয়ে এখন অথৈ সাগরে পড়েছে শফিকের পরিবার। সন্তানকে হারিয়ে শোকে পাথর তার মা; অবুঝ তিন শিশুসন্তান নিয়ে দিশেহারা স্ত্রী।
শফিকের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।