পাবনার সুজানগর ইউএনও কার্যালয়ে দুপুরে এ ঘটনার পর রাত ১০টা পর্যন্ত বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক চলে।
Published : 04 Mar 2025, 11:08 AM
পাবনার সুজানগরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে জামায়াতে ইসলামীর চার নেতা বিএনপির নেতাকর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর রাশেদুজ্জামান।
মারধরের শিকার হওয়ারা হলেন- উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ফারুক-ই আজম, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি টুটুল বিশ্বাস, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি ওয়ালিউল্লাহ বিশ্বাস ও সাবেক কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার দুপুরে জামায়াতের চার নেতা ইউএনওর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ইউএনও ব্যস্ত থাকায় তারা কার্যালয়ে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন।
এ সময় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মজিবর রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মীও ইউএনওর কাছে যান।
তারা সেখানে জামায়াত নেতাদের দেখে ক্ষিপ্ত হন। বিএনপি নেতারা প্রশ্ন তোলেন- “এরা কেন এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে?”
তখন বিএনপি নেতাকর্মীরা ইউএনওর কক্ষ থেকে বের হয়ে আরও কয়েকজনকে ডেকে আনেন। এরপর মজিবর রহমান, বাবু, মানিকসহ ৩০-৪০ জন ফের ইউএনওর কক্ষে ঢুকে ওই জামায়াত নেতাদের মারধর করেন।
এতে জামায়াত নেতারা গুরুতর আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এদিকে ঘটনার পর জামায়াতের উপজেলা আমির কেএম হেসাব উদ্দিন কয়েকশ নেতাকর্মী নিয়ে দ্রুত ইউএনও অফিসে যান এবং ঘটনার প্রতিবাদ জানান।
এ সময় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।
এরপরই উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম বিশ্বাস, সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফ, যুবদলের আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান পিন্টুসহ দলটির শীর্ষ নেতারা ঘটনাস্থলে যান।
পরে রাত ১০টা পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে ইউএনওর সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের দফায় দফায় বৈঠক চলে। পরে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামান বলেন, “বিষয়টি দুঃখজনক। যেহেতু আমার কক্ষে ঘটনা ঘটেছে, কাজেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম বিশ্বাস, সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফ ও যুবদলের আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, কোনো সন্ত্রাসী তাদের দলের সদস্য হতে পারে না। তারা বলেছেন- অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।
এ বিএনপি নেতা মজিবর রহমানসহ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠা কয়েকজনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এদিকে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল গাফ্ফার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, “দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আমরা সাংগঠনিকভাবে কর্মসূচি দেব।”
জামায়াত নেতাদের দাবি, সুজানগরের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে মাটি ও বালি কাটা বন্ধ করায় বালি খেকোরা জামায়াত নেতাদের উপর ক্ষুব্ধ হয়, তারই জের ধরে তারা এই হামলা চালিয়েছেন।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার সকালে সুজানগর থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, “এ ঘটনায় কেউ এখনো মামলা করতে আসেননি। তারা এলেই মামলা নেওয়া হবে।”