সোমবার মধ্যরাতে যৌথ বাহিনী গাইবান্ধার সাঘাটায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। পরে তাদের মধ্যে দুজন মারা যান।
Published : 12 Sep 2024, 09:39 PM
গাইবান্ধার সাঘাটায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক হওয়ার পর দুই ব্যক্তির মারা যাওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ এবং জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এলাকাবাসীর ব্যানারে সাঘাটা উপজেলার হাট ভরতখালীতে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে নিহত ও আহতদের স্বজন ছাড়াও স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শত শত নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করে।
বিক্ষোভ মিছিলটি হাট ভরতখালীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে ওই এলাকার সাঘাটা-গাইবান্ধা সড়কে মানববন্ধন করা হয়।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন জাতীয় কৃষক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম গোলাপ, সাম্যবাদী আন্দোলনের গাইবান্ধা জেলার নেতা মঞ্জুরুল আলম মিঠু, জেলা সেচ পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ, স্থানীয় সমাজসেবক শামছুল হক, সাঘাটা উপজেলা ভূমিহীন সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, আটক ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইটের ভাই সুজাউদ্দৌলা সুজা, নিহতদের পরিবারের সদস্য তহমিনা এ্যানি ও রোকসানা আক্তার।
জাতীয় কৃষক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম গোলাপ বলেন, “বিগত সরকারের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ জুলুম-নির্যাতনের হাত থেকে দেশ আজ মুক্ত হয়েছে। কিন্ত সেই মুক্ত দেশে আবারও কেন আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়ে নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড ঘটানো হল।”
তিনি বলেন, “যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে। আমরা মুক্ত দেশে জুলুম-নির্যাতন আর দেখতে চাই না।”
ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইটের ভাই সুজাউদ্দৌলা সুজা বলেন, “যারা আমার ভাতিজা আপেল ও চেয়ারম্যানের গৃহকর্মী শফিকুলকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে; আমরা সেই হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
সোমবার মধ্যরাতে যৌথবাহিনী উপজেলার ভরতখালীহাটে অভিযান চালায়। ওই এলাকার গোবিন্দি ও বাঁশহাটি থেকে ইউপি চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। পরে তাদের মধ্যে দুজন মারা যান।
পুলিশ ‘অসুস্থতার’ কারণে দুজন মারা গেছে দাবি করলেও পরিবারের অভিযোগ, নির্যাতনে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
নিহতরা হলেন- উপজেলার গোবিন্দী গ্রামের রোস্তম আলীর ছেলে সোহরাব হোসেন আপেল (৩৫) এবং উত্তর সাথালিয়া গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪৫)।
আটক বাকি তিনজন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তারা হলেন- সাঘাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাঘাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন সুইট (৫০), চেয়ারম্যানের মোটরসাইকেলের চালক ও ভরতখালী বাঁশহাটি এলাকার রিয়াজুল ইসলাম রকি (২৮) এবং চেয়ারম্যানের প্রতিবেশী শাহাদৎ হোসেন।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে নিহত দুজনসহ বাকি তিনজনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিস্ফোরক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন-
যৌথ অভিযানে রাতে আটক চেয়ারম্যানসহ ৫ জন, দুপুরে দুইজনের মৃত্যু
গাইবান্ধায় যৌথ বাহিনীর অভিযান: মৃত দুজনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা