“অনেক এলাকায় অবৈধ দখলদাররা খাল দখল করে স্থাপনা তৈরি করেছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব খালের সংস্কার হয় না।”
Published : 12 Dec 2024, 09:19 AM
“এক সময় প্রবল খরস্রোতা ছিল হাড়িখালী খাল। এই খালের পানি দিয়ে হাড়িখালী গ্রাম এলাকায় শত শত বিঘা জমিতে ধানের চাষ হতো। কিন্তু গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে পানির প্রবাহ না থাকায় খালটি মরে গেছে।” কথাগুলো বলছিলেন বাগেরহাট শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফররুখ হাসান।
হাড়িখালী খালের মত বাগেরহাট পৌরসভার অধিকাংশ খাল ভরাট হয়ে নাব্য হারিয়েছে। দখল ও যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলায় খালগুলো ভরাট হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
খালগুলো ভরাট হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়িতে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এসব খাল দখলমুক্ত করে পুনঃখনন ও সংস্কারের দাবি তুলেছে এলাকাবাসী।
বাগেরহাট পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী রিজভী জানান, ১৯৫৮ সালের ১ এপ্রিল ১৫ দশমিক ৮৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ পৌরসভার যাত্রা (স্থাপিত) শুরু হয়। সোয়া লাখের বেশি মানুষের বসবাস এই পৌরসভায়। প্রবল প্রমত্তা ভৈরব নদের তীর ঘেঁষা বাগেরহাট পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে পাঁচটি খাল রয়েছে।
বাসাবাটি, নাগেরবাজার, ব্যালের, সরুই ও হাড়িখালি-এই পাঁচ খালের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৩ কিলোমিটার। দ্রুতই দরপত্র আহ্বান করে পৌরসভার পাঁচটি খাল সংস্কার করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে এনে দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।
বাসাবাটি, নাগেরবাজার, হাড়িখালী, সরুই, মুনিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, বাগেরহাট পৌরসভার ভেতর দিয়ে প্রবহমান খালগুলো দিয়ে এক সময় বড় বড় নৌকা চলাচল করত। খালে গোসল ও সাঁতার কাটা যেত। এখন সেগুলো মরে গেছে। খাল চেনার উপায় নেই।
বাগেরহাট শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মুনিগঞ্জ এলাকার মেহেদি হাসান বলেন, “আমার বাড়ির পাশ দিয়ে নাগেরবাজার খাল বয়ে গেছে। আমার ছেলেবেলায় আমি ও আমার বন্ধুরা এই খালে সাঁতরে বেড়িয়েছি। আগে এখানে বড় খাল ছিল তা, এখন কেউ বলতে পারবে না। স্থানীয়দের অসচেতনতা ও পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলায় খালটি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়ে আছে।
“বর্ষা মৌসুম আসলে পানি নামতে না পারায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনেক এলাকায় অবৈধ দখলদাররা খাল দখল করে স্থাপনা তৈরি করেছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব খালের সংস্কার হয় না।”
পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী রিজভী বলেন, “ময়লা আবর্জনার স্তূপ জমে খালগুলোর অবস্থা এতোটাই খারাপ যে, পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। আগামী জুনের মধ্যে খালগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে পৌরবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে আশা করছি।”