Published : 04 Sep 2024, 06:45 PM
নোয়াখালীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন দুর্গত এলাকার লোকজন। তবে বাড়ি ফিরে বসতঘরের অবস্থা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন অনেকে।
ঘরে পানি থাকায় অনেক আবার আশ্রয়কেন্দ্রে ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে আবার পানির মধ্যেই কোনোমতে নিজ ঘরে থাকার ব্যবস্থা করতে কাজে নেমে পড়েছেন।
বন্যায় পানি ঘরে ওঠায় নোয়াখালী পৌরসভার লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার ৪০ বছর বয়সী আমেনা বেগম স্বামী ও প্রতিবন্ধী শিশু সন্তানকে নিয়ে নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেন। সাতদিন পর সেখান থেকে ফিরে বসতঘরের অবস্থা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
দিনমজুর স্বামী বন্যার পর থেকে বেকার। এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত ঘর মেরামত ও খাবারের চিন্তায় দিশেহারা আমেনা তার ঘরটি মেরামত করার জন্য সহায়তা চেয়েছেন সরকারের কাছে।
একই অবস্থা লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার বেশিরভাগ মানুষের। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ফিরে বাড়িঘরের বেহাল দশা দেখে চোখে অন্ধকার দেখছেন অনেকে। বেশিরভাগ কাঁচা ঘরের মেঝের মাটি সরে যাওয়ায় ঘরগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
পানির ঢেউয়ে ঘরের চারপাশের বেড়া ভেঙে গেছে। রান্নাঘর থেকে এখনও পানি না নামায় চুলা জ্বালানোর অবস্থা নেই। পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা।
বন্যার পানিতে বসতঘর ডুবে যাওয়ায় স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন সরকারি মহিলা কলেজ এলাকার মো. ইয়াসিন। বুধবার আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরে দেখেন ঘরে এখনও পানি। রান্না করার উপায় নেই।
তিনি বলেন, “ঘরের যে অবস্থা, আরও অন্তত সাতদিন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা দরকার। কিন্তু আমাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বলেছে কলেজ খুলবে তাই আমরা যেন বাড়িঘরে চলে যাই।”
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান খান জানান, নোয়াখালীতে ১৬ লাখ ৪ হাজার ৩শ মানুষ এখনও পানিবন্দি। ৯০১টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৭৮৮ জন। জেলায় ২২০টি ঘর পুরনো এবং ৫ হাজার ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সরকারি ১২৪টি এবং বেসরকারি ১৬টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১১ জন।
সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে নগদ ৪৫ লাখ টাকা, ১ হাজার ৭১৮ মেট্রিকটন চাল, এক হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৫ লাখ টাকার শিশু খাদ্য ও ৫ লাখ টাকার গোখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।