দি রোজ ড্রেসেস কারখানায় ৪৪ জনের তালিকা টাঙ্গিয়ে দিয়ে তাদের ছাঁটাই করেছে কর্তৃপক্ষ।
Published : 29 Sep 2024, 06:55 PM
সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া, বেতন বৃদ্ধি এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা। শিল্পাঞ্চলে ২০ কারখানায় উৎপাদন বন্ধ করেছে।
এ ছাড়া বন্ধ থাকা একটি কারখানায় ৪৪ শ্রমিককে ছাঁটাই করেছে কর্তৃপক্ষ।
সার্বিক পরিস্থিতি জানিয়ে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম রোববার বলেন, “শ্রম আইন ২০০৬ সালের ১৩ (১) ধারায় বন্ধ রয়েছে ১০টি কারখানা এবং সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে আরও ১০টি কারখানা। তবে শিল্পাঞ্চলের পরিস্থিতি আগের থেকে স্বাভাবিক রয়েছে।”
এ ছাড়া শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। যৌথ বাহিনীর টহল কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে।
শ্রমিকরা জানান, সকালে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের জিরাব এলাকার লুসাকা গ্রুপের বেক নিটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকরা কারখানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা কারখানাটি খুলে দেওয়ার দাবি জানান। তারা সেখান থেকে মিছিল নিয়ে আশপাশের কয়েকটি কারখানার সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। তখন কয়েকটি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
লুসাকা গ্রুপের একজন শ্রমিক বলেন, “সকালে আমি কারখানার সামনে গিয়েছিলাম। পরে শ্রমিকরা বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে এবং শ্রমিকদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার চেয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা সড়কে নেমেছিল।
“কিন্তু পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া দিয়ে শ্রমিকদের সরিয়ে দেয়। পরে মণ্ডল নিটওয়্যারের শ্রমিকরাও আন্দোলন শুরু করে এবং আশপাশের কারখানাগুলোতে গিয়ে শ্রমিকদের বের করে নিয়ে আসে।”
লুসাকা গ্রুপের আরেকজন শ্রমিক বলেন, তাদের কারখানায় এর আগেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ৯ সেপ্টেম্বর উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিকদের বিরুদ্ধে লুসাকা গ্রুপের সহকারী ব্যবস্থাপক (এইচআর অ্যাডমিন) মো. সোহেল রানা বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ২৭ শ্রমিকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
লুসাকার পরবর্তীতে মণ্ডল নিটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকরাও বেতন বৃদ্ধির দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের জিরাব এলাকায় অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে আশপাশের আরও কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরাও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। এতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে আশপাশের কারখানা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয় বলে শ্রমিকরা জানান।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, “প্রায় সব গামেন্টেই স্বাভাবিকভাবে কাজ চলছে। মণ্ডল নিটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকরাও বেতন বৃদ্ধি ও তাদের দুইজন শ্রমিক নিখোঁজের গুজব ছড়িয়ে বিক্ষোভ করেছেন। এ ছাড়া লুসাকার শ্রমিকরাও কারখানা খুলে দেওয়া ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন করেছেন।”
তিনি বলেন, অনির্দিকালের জন্য বন্ধ দি রোজ ড্রেসেস লিমিটেড কারখানাটি আগামীকাল (সোমবার) খুলে দেওয়া হবে বলে নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে কারখানাটির ৪৪ জনের তালিকা টাঙ্গিয়ে দিয়ে তাদের ছাঁটাই করেছে কর্তৃপক্ষ।