এর আগে দুপুরে সদর উপজেলার ভাসাপাড়া গ্রামের একটি বাড়ি ঘেরাও করে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
Published : 08 Jun 2024, 11:18 PM
সদর উপজেলার এক গ্রামে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে মৎস্য খামার ঘিরে অভিযান পরিচালনার মধ্যেই এবার নেত্রকোণা শহরের একটি বহুতল ভবনও ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শনিবার রাত ১০টা থেকে শহরের মদন বাসস্ট্যান্ডের পাশের বনুয়াপাড়া এলাকার নেওয়াজ নগরে একটি চারতলা ভবন জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রেখেছে বলে জেলা পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ জানান।
পুলিশ সুপার আরও জানান, রাত ৯টার দিকে বাড়িটির তৃতীয় তলার ভাড়াটিয়া সাইফুল ইসলামের (৪৫) ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে অভিযান চালানো হয়েছে। সাইফুল ইসলামের বাড়ি শরীয়তপুরে। তবে ফ্ল্যাটে কাউকে পাওয়া যায়নি।
রোববার সকালে ঢাকা থেকে আসা বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা ফ্ল্যাটটিতে তল্লাশি চালাবে বলেও জানান তিনি।
বাড়িটির মালিক আব্দুল খালেক বলেন, তৃতীয় তলার ওই ভাড়াটিয়া স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন। সবশেষ বুধবার তিনি সপরিবারে বাসা থেকে বের হয়েছেন।
তবে ওই ভাড়াটিয়া ঢাকার কেরানিগঞ্জের বাসিন্দা এমন মিথ্যা তথ্য দিয়ে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।
এর আগে দুপুর ১টা থেকে সদর উপজেলার কাইলাটী ইউনিয়নের ভাসাপাড়া গ্রামে মাছের খামার ঘিরে অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত ডিআইজি আসাদ উল্লাহ চৌধুরীসহ সাত সদস্য এই অভিযানে অংশ নিচ্ছেন।
শেষ বিকালে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঢাকা থেকে বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা রওনা হয়েছেন। তারা রাতেই এসে নেত্রকোণায় পৌঁছাবেন।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভাসাপাড়া গ্রামের মাছের খামারে শুক্রবার অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। তখন সেখান থেকে একটি পিস্তল, ১৭টি গুলি ও একটি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়। তবে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয়, আগেই সেখানকার বাসিন্দারা সটকে পড়েছেন।
নেত্রকোণা জেলা শহর থেকে ভাসাপাড়া গ্রামটি প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভাল। তবে গ্রামটি একটি প্রান্তে নিরিবিলি পরিবেশে মৎস্য খামারটি অবস্থিত। এর পাশে হাওর রয়েছে।
নেত্রকোণায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে মাছের খামার ঘিরে অভিযান
বিকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, খামারটির ফটক বন্ধ। চারদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছে। গ্রামের উৎসুক লোকজনও রয়েছে। খামারের ভেতরে একটি দোতলা বাড়ি এবং তার পাশে আরেকটি টিন শেড ঘর রয়েছে। বাড়িটি চারদিক থেকে বাউন্ডারি করা। ভেতরে প্রচুর গাছপালা রয়েছে। বাড়ির দুই পাশেই খালি ধানের ক্ষেত। সামনে দিয়ে রাস্তা গেছে।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে মনে করছে, জঙ্গিরা এই জায়গাটিকে তাদের প্রশিক্ষণের আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করত। হয়তো যারা ছিলেন, তারা পালিয়ে গেছেন।
ভাসাপাড়া গ্রামের মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই বাড়িটির মালিক গাজীপুরের ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল মান্নান। তিনি প্রায় ২৫ বছর আগে এই দোতলা বাড়িটি তৈরি করেন। তবে বাড়িটি ভাড়া দেন আট বছর আগে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, বাড়ির ফটক প্রায় সবসময় বন্ধই থাকত। মাঝে মাঝে অপরিচিত এক-দুজন লোক সেখান থেকে বের হতেন।