ফায়ার সার্ভিসের ধারণা, বৈদ্যুতিক শট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
Published : 29 Jun 2024, 06:41 PM
কুড়িগ্রাম শহরে ব্যবসায়িক মালামাল ও আসবাবপত্রসহ ১৭টি ঘর পুড়ে গেছে।
শুক্রবার মধ্যরাতে শহরের মোল্লা পাড়া এলাকায় এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে বলে সদর থানার ওসি মাসুদুর রহমান জানান।
ওসি মাসুদুর বলেন, রাতে প্রথমে শাহাজাহান মিয়ার ঘরে আগুনের সূত্রপাত হয়ে মুহূর্তেই পাশে লাগোয়া সোহেল মিয়া, মোছা. ফাতেমা বেগম, বদিউল্লাহ, কামাল মিয়া, বিপ্লব মিয়া, কহিনুর বেগম, রাবেয়া বেগম ও নুরজাহানের ঘরে ছড়িয়ে পড়ে।
“খবর পেয়ে কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।”
এ ছাড়া ওই ঘরে থাকা আসবাবপত্র, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, কসমেটিকসসহ ব্যবসায়িক মালপত্র ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়ে গেছে।”
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী সমিত চক্রবর্তী বলেন, “আমি ব্যবসায়িক কাজ শেষ করে একটু বাইরে গিয়েছিলাম। পরে এসে দেখি সেচ পাম্পের মোটরটি চলছে না। তাই আমি মোটরের সুইস বন্ধ করে দেই। একটু পর সেচ পাম্পের ওখানে ধোঁয়া বের হতে দেখি।
“পরে কিছু বুঝে উঠার আগেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে সব রুমে। পরে আমার তিনটি রুমে থাকা বিভিন্ন মালামাল, নগদ টাকা, ফ্রিজ ও ঘরে থাকা আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়।”
তিনি বলেন, “আমরা ছয়টি কোম্পানির সঙ্গে ডিলার সিপের ব্যবসা ছিল। সব মালামাল পুড়ে শেষ। শুধু নিজের জীবন নিয়ে আমরা ভেতর থেকে বেড়িয়ে এসেছি। এখন আমরা পথে বসে গেলাম।”
কামাল মিয়া নামের একজন বলেন, “আমার তিনটি রুমে থাকা দুইটি এলএডি টেলিভিশন, দুইটি বক্স খাট, ফ্রিজ, সাতটি ফ্যানসহ রুমে থাকা সব কিছু পুড়ে শেষ। শুধু পড়নে থাকা পোশাক ছাড়া কিছুই উদ্ধার করতে পারি নাই।”
কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, “প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
“আমরা খবর পাওয়া মাত্র গিয়ে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় রাত দেড়টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।”
তিনি বলেন, নয়জন মালিকের ১৭টি ঘর পুড়ে গেছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনও নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।
তবে অগ্নিকাণ্ডে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুশফিকুল আলম হালিম বলেন, “নয় ব্যক্তির ১৭টি ঘর পুড়ে গেছে। এই পরিবারগুলোর মধ্যে এক পরিবারে এসএসসি পরীক্ষার্থীর বই, খাতা ও জামাকাপড় পুড়ে গেছে।
“আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তার সবকিছুর ব্যবস্থা করে দিয়েছি । কেন না রোববার তার পরীক্ষা। এছাড়াও অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সরকারিভাবে সহায়তা করতে যা করণীয় তা করা হচ্ছে।”
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, “কুড়িগ্রাম -২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক খন্দকার অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজখবর নিয়েছেন এবং তাদের সব ধরনের সহায়তা করতে প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
“প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। একজন এইচএসসি পরীক্ষার্থীর বই, খাতা-কলম, জ্যামিতি বক্স, পোষাক, জুতাসহ প্রয়োজনীয় সব সহায়তা করা হয়েছে যেন সে নির্বিঘ্নে পরীক্ষায় বসতে পারে।”
এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের টিন ও অর্থনৈতিক সহায়তা করা হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা এবং ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে বলে জানান এই জেলে প্রশাসক।