পদ্মা সেতু চালুর পর এই ঘাট তার পুরনো জৌলুস হারিয়েছে।
Published : 21 Apr 2023, 03:40 PM
ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট দিয়ে বাড়ি ফিরছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১ জেলার মানুষ। ঘাটে ছোট গাড়ির কিছুটা চাপ থাকলেও পদ্মা পারাপারে যাত্রীদের তেমন কোনো ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না।
পদ্মা সেতু চালুর পর এই ঘাট তার পুরনো জৌলুস হারিয়েছে। শুক্রবার ভোর থেকেই রাজধানীর গাবতলী থেকে ঘরমুখো যাত্রীরা লোকাল বাসে করে ঘাটে আসতে শুরু করেন। রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলার কিছু বাস এবং প্রাইভেটকারে করেও কিছু পরিবার এদিকে পদ্মা পাড়ি দিতে আসে।
বেলা ১১টার দিকে পাটুরিয়া ৫ নম্বর ঘাট এলাকায় শতাধিক প্রাইভেটকার, যাত্রীবাহী অর্ধশতাধিক পরিবহন পদ্মা পারাপারের অপেক্ষায় ছিল।
গাবতলী থেকে ছেড়ে আসা লোকাল বাসগুলো যাত্রীদের লঞ্চ টার্মিনালের প্রায় আধা কিলোমিটার আগেই নামিয়ে দিচ্ছে। অধিকাংশ যাত্রী হেঁটে আসছেন লঞ্চ ঘাটে, কিছু যাত্রী ফেরিতেও পার হচ্ছেন।
অন্যদিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ২০টি ফেরি নিয়োজিত রয়েছে ঈদযাত্রী ও যানবাহন পারাপারের জন্য। ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য রয়েছে পুলিশ।
ঢাকা থেকে আসা যশোরগামী যাত্রী আলী হোসেন বলেন, “সকালেই রাস্তায় কিছু কিছু জায়গাতে যানবাহনেরর ধীর গতি ছিলো। তবে বড় ধরনের কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। ঘাট এলাকায় এসে ভালো লাগছে যে, অন্য বছরের মত কোনো ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না। নামলাম গাড়ি থেকে আর কিছু দূর হেঁটেই লঞ্চে উঠে পড়লাম। এখন শুধু নদী পাড়ি দেওয়া।”
নবীনগর থেকে আসা ইমরুল নামের এক তৈরি পোশাক শ্রমিক বলেন, “সকাল ৮টার দিকে নবীনগর থেকে গাড়িতে উঠেছি আর ১০টার দিকে ঘাটে এসে পৌঁছেছি। রাস্তায় তেমন কোনো যানজট নেই।
“প্রতিটি ঈদে একটাই বড় সমস্যা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে আমাদের কাছ থেকে। আমরা কিন্তু নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আয় করি আর সেই টাকা নিয়ে বাড়ি যাই।
তিনি আরও বলেন, “রাস্তায় যদি এভাবে অতিরিক্ত খরচ হয়ে যায় তাহলে বাড়ি থেকে আসার পথে আমাদের অন্য কারও কাছে হাত পাততে হয়। অতিরিক্ত ভাড়া ছাড়া আর সব কিছুই ঈদযাত্রায় আমার কাছে ভালো লাগছে।”
পাটুরিয়া ঘাট লঞ্চ মালিক সমিতির ব্যবস্থাপক পান্না লাল নন্দী বলেন, “ভোর থেকেই যাত্রীর চাপ চোখে পড়ার মত। তবে প্রতিটি লঞ্চে ধারণ ক্ষমতার অধিক যাত্রী যাতে নিতে না পারে সেজন্য আমরা তৎপর।”
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম শাহ খালেদ নেওয়াজ বলেন, “সকাল থেকেই ছোট গাড়ির কিছুটা উপস্থিতি চোখে পড়েছে। তবে আমরা তাদের কোনো ভোগান্তি পোহাতে দেইনি। ৫ নম্বর ঘাট দিয়ে গাড়িগুলো পার করছি।
“অন্যদিকে যাত্রীবাহী পরিবহনগুলো ঘাট এলাকায় আসছে এবং পাঁচ-দশ মিনিট অপেক্ষা করেই ফেরিতে উঠে নদী পার হচ্ছে।”
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ গোলাম আজাদ খান বলেন, “প্রতিবারের মতো এবারও আমরা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তা এবং যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি।”