সেন্ট মার্টিনে ‘সহস্রাধিক ঘরবাড়ি’ বিধ্বস্ত, মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়ছে

“তবে জেলাজুড়ে হতাহতের কোনো খবর আমাদের কাছে নেই।”

টেকনাফ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2023, 01:23 PM
Updated : 14 May 2023, 01:23 PM

ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে বঙ্গোপসাগরের বক্ষে থাকা প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের গাছপালা ও বাড়িঘরের বেশ ক্ষতি হয়েছে; গাছচাপায় একজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

রোববার সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু করে কক্সবাজার জেলার এ দ্বীপে। দুপুরের দিকে বৃষ্টি ও বাতাসের বেগ বাড়তে থাকে। বিকাল ৪টার পর তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

টানা এক ঘণ্টার বেশি প্রচণ্ড বাতাস ও বৃষ্টির পর আবহাওয়া ধীরে ধীরে শান্ত হতে থাকে। বিকাল ৫টার পর বেরিয়ে দেখা যায়, রাস্তাঘাটে গাছপালা উপড়ে বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টিনের ও কাঁচা ঘরবাড়ি।

সন্ধ্যার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, সেন্ট মার্টিনে ১২০০ মত ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। তবে জেলাজুড়ে হতাহতের কোনো খবর আমাদের কাছে নেই।”

এ সময় তিনি আরও জানান, আবহাওয়া একটু ভাল হলেই জেলা প্রশাসনের ত্রাণ তৎপরতা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কাজ শুরু হবে।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুল ইসলাম সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা স্থানীয় মেম্বার ও লোকজনের কাছ থেকে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য নিচ্ছি। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাছপালা উপড়ে গেছে, ঘরবাড়ি ভেঙে মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

তবে এখনি প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি জানা সম্ভব না উল্লেখ করে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, “এখন অন্ধকার হয়ে গেছে। আকাশ বেশ মেঘাচ্ছন্ন, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও হচ্ছে।”

তবে সেন্ট মার্টিনের মূল ভূখণ্ডের কোথাও জলোচ্ছ্বাস হয়নি বলেও জানান ইউপি চেয়ারম্যান।

তিনি আরও জানান, তবে আবহাওয়া শান্ত হওয়ার পর লোকজন আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যাচ্ছে।

সেন্ট মার্টিন দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে জানা গেছে, ঝড়ের সময় দ্বীপে যারা অবস্থান করছিলেন তাদের বড় অংশই ছিলেন সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র, হোটেল ও রিসোর্টে।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে দুই হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। ঝড় কমে যাওয়ার পর অনেকেই সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন।

পুরুষরা আগে বেরিয়ে কাছাকাছি থাকা বাড়িঘর গিয়ে দেখে আসে। পরে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে সঙ্গে থাকা জিনিসপত্রসহ নারী ও শিশুদের নিয়ে বাড়িঘরে যায়। তবে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন তারাই; যাদের বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।

সড়কে গাছপালা পড়ে থাকতে দেখা গেছে। কোথাও কোথাও গাছ উপড়ে বাড়িঘরে পড়েছে। বাড়ির সীমানা প্রাচীর পড়ে গেছে। এর মধ্যেই লোকজন বাড়ি ফিরছে।