রোববার সকাল ৮টায় একটি ও বেলা আড়াইটায় আরও দুইটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বাতিল করা হয় বলে রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান।
Published : 07 Jan 2024, 08:56 AM
ভোট শুরুর আগেই নৌকার ব্যালটে সিল, ব্যালটপেপার ছিনতাই ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে মারধরসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে নরসিংদীর তিনটি কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হয়েছে।
রোববার সকাল ৮টায় নরসিংদী-৪ মনোহরদী-বেলাব আসনের একটি ও বেলা আড়াইটায় নরসিংদী-৩ শিবপুর আসনের দুইটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বাতিল হয় বলে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা বদিউল আলম জানান।
ভোট শুরুর পরপরই বেলাবো উপজেলার সল্লাবাদ ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বাতিল করা হয় বলে রিটার্নিং কর্মকর্তা বদিউল আলম জানান।
এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন পাঁচবারের উপজেলা চেয়ারম্যান ও নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম খাঁন বীরু।
এলাকাবাসী জানান, ভোট শুরুর কিছুক্ষণ আগে শিল্পমন্ত্রীর ছেলে মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদী জোর করে কেন্দ্রে সংগ্রহ করা ১২টি বইয়ে নৌকার সিল মারেন। এ সময় কেন্দ্রে থাকা লোকজন চিৎকার শুরু করলে প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে কেন্দ্রটি বাতিল করে দেন।
এ বিষয়ে মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদী তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন।
তিনি বলেন, "খুবই পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়ানো হচ্ছে আমি গ্রেপ্তার হয়েছি, এই করেছি, সেই করেছি। আওয়ামী লীগের বিশাল কর্মী বাহিনী রয়েছে, ছাত্রলীগের কর্মী বাহিনী রয়েছে। তারা আপনাদের পাশে আছে। আমরা বিশাল সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষে কাজ করছি। কেউ গুজবে কান দেবেন না।"
এদিকে শিবপুরের বাতিল করা কেন্দ্রগুলো হলো- দুলালপুর ফাজিল মাদ্রাসা ও একই এলাকার ভিটিচিনাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
স্থানীয়রা জানান, একদল লোক একই এলাকার পাশাপাশি এ দুটি কেন্দ্রে গিয়ে হামলা চালিয়ে ব্যালটপেপার ছিনতাই ও সিল মারার চেষ্টা করে। এ সময় বাধা দিলে দুলালপুর ফাজিল মাদ্রাসা ফাজিল মাদ্রাসার প্রিজাইডিং কর্মকর্তা রেজাউল হাসানকে মারধর করা হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আসনার ও পুলিশ ছয় রাউন্ড গুলি করেন। ওই সময় ঘটনাস্থল থেকে আটজনকে আটক করে আইন শৃংখ্যলা বাহিনীর সদস্যরা।
প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. রেজাউল বলেন, “বেলা ১টার দিকে ৫০ থেকে ৬০ জন হঠাৎ কেন্দ্রের ভেতরে ঢুকে ব্যালটপেপার ছিনিয়ে নেয়। ওই সময় বাধা দিতে গেলে তারা আমাদের মারধর ও ভাঙচুর করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আসনার ও পুলিশদের গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
“পরে পরপর ছয় রাউন্ড ফাঁকা গুলি করলে তারা পালিয়ে যায়। ওই সময় তাদের হামলা থেকে বাঁচতে আমরা দরজা বন্ধ করে দেই।”
রিটার্নিং কর্মকর্তা বদিউল আলম বলেন, “ব্যালটপেপার ছিনতাই, কেন্দ্রে হামলা ও প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগে শিবপুরের দুলালপুরের একটি কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভিটিচিনাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটও বাতিল করা হয়েছে।”