বিসর্জন ঘিরে পর্যটক ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ৩ লাখের অধিক মানুষের সমাগম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Published : 12 Oct 2024, 11:59 PM
প্রতি বছরের মত বড় জনসমাগমের মধ্যদিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য প্রস্তুত হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত।
রোববার সৈকতের লাবণী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে বিজয়া সম্মিলনের মাধ্যমে শুরু হবে এই প্রতিমা বিসর্জন।
কর্তৃপক্ষ বলছে, কক্সবাজার ও পাশের বান্দরবান জেলার অর্ধশতাধিক মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে এই স্থানে।
যা ঘিরে পর্যটক ও হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তত ৩ লাখের অধিক মানুষের সমাগম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন করতে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
শনিবার দুপুরে ডিসির কার্যালয়ে এ বিষয়ে সভা হয়েছে।
কক্সবাজারের ডিসি মুহাম্মদ সালাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিনিধিরা ছিলেন।
সভায় বক্তব্য দেন সেনাবাহিনীর ৯ ইসিবি কক্সবাজারের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর আহমেদ, পুলিশের এসপি মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ, সিভিল সার্জন আসিফ আহমেদ হাওলাদার, জেলা বিএনপির সভাপতি শাহাজাহান চৌধুরী, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) উদয় শংকর পাল মিঠু, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) দীপক শর্মা দিপু।
ডিসি সালাহ উদ্দিন বলেন, সভায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন করতে সার্বিক প্রস্তুতি এবং উদ্যোগ সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে।
তিনি জানান, সৈকতের লাবণী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে দুপুরের পরপরই বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে আনা হবে প্রতিমা। আড়াইটা থেকে শুরু হবে প্রতি বছরের ন্যায় বিজয়া সম্মিলন।
বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত সৈকতের সাগরে বিসর্জন হবে প্রতিমাগুলো।
বিসর্জন ঘিরে চট্টগ্রাম থেকে নৌ বাহিনীর একটি ডুবুরি দল সৈকতে থাকবে জানিয়ে ডিসি বলেন, একইসঙ্গে লাইফগার্ড কর্মীরা দায়িত্ব পালন করবেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চার স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করবেন।
পূজারি, আগত দর্শণার্থী ও পর্যটক মিলে বিপুল মানুষের সমাগম হবে। এ জন্য পৌরসভা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী, পুলিশ, জেলা প্রশাসন সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করবে।
স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে থাকবে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য বিশেষ দল।
ডিসি বলেছেন, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদ সভায় জানিয়েছে, ৫০ এর অধিক মণ্ডপের প্রতিমা আনা হবে এবার বিসর্জনে।
এসব প্রতিমা আনার সময় স্থানীয় মণ্ডপের স্বেচ্ছাসেবকের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা দেবেন।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) উদয় শংকর পাল মিঠু বলেন, ১৫১টি প্রতিমা ও ১৭০টি ঘট পূজা মিলিয়ে জেলায় ৩২১টি মণ্ডপে চলছে দুর্গাপূজা।
তার দাবি, দেশের সবচেয়ে বড় বিসর্জন অনুষ্ঠান হবে সৈকতে।
প্রশাসনের নিদের্শনা মতে, প্রতিমা বহনকারী গাড়ি সারিবদ্ধভাবে আসবে এবং ফিরবে।
তিনি বলেন, বিকাল ৫টার মধ্যেই শেষ হবে বিসর্জনের সব আনুষ্ঠানিকতা।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “শহরের বাইরের পূজামণ্ডপগুলোর প্রতিমা কলাতলী মোড় এবং শহরের অভ্যন্তরের প্রতিমাগুলো প্রধান সড়কের হলিডে মোড় হয়ে লাবণী পয়েন্টের বিসর্জন অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছবে।
“প্রতিমাগুলো স্ব স্ব মণ্ডপ থেকে গাড়িতে করে আনার সময় আনসার সদস্যরা নিরাপত্তায় থাকবেন। পাশাপাশি পুলিশের টহল দলও নিয়োজিত থাকবে।”
জসিম উদ্দিন বলেন, “সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কঠোর থাকবে প্রশাসন। সৈকতের প্রবেশমুখ, প্রতিমা বহনকারী সড়কে থাকবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।”
এছাড়া সেনাবাহিনী, র্যাব ও বিজিবিও দায়িত্ব পালন করবে।
এদিকে, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান দুর্গোৎসব ঘিরে টানা চার দিনের ছুটিতে লাখো পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার।
বৃহস্পতিবার থেকে প্রকৃতি উপভোগের উদ্দেশ্যে আসা পর্যটকের ভরপুর এখন কক্সবাজার।
কক্সবাজার আবাসিক হোটেল-মোটেল প্রতিষ্ঠানের দেয়া তথ্য মতে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সোয়া এক লাখের বেশি পর্যটক গড়ে প্রতিদিন কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। পুরো সৈকতসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন নিজের মত।